পাতা:জ্ঞানযোগ - চতুর্থ সংস্করণ.pdf/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিণামশীল জড়ম্রোতের নাম শরীর, জ্ঞার নিয়তপরিণামূলীয় চিন্তা স্রোতের নাম মন। তবে এই যে একত্বের প্রতীতি হইতেছে, তাহ কিসে? বৌদ্ধ বলেন,-"এই একত্ব বাস্তবিক নাই। একটি জলস্তু মশাল লইয়া ঘুরাইতে থাক। খুরাইলে, একটা অগ্নির বৃত্তস্বরূপ হইবে। বাস্তবিক কোয় বৃত্ত হয় নাই, কিন্তু মশালের নিয়ত ঘূর্ণনে উহা ঐ বৃত্তের আকার ধারণ করিয়াছে। এইরূপ আমাদের জীবনেও একত্ব নাই ; জড়ের রাশি ক্রমাগত চলিয়াছে। সমুদয় জড়রাশিকে এক বলিতে ইচ্ছা হয়, বল, কিন্তু তাতিরিক্ত বাস্তবিক কোন একত্ব নাই। মনের সম্বন্ধেও চন্ধপ ; প্রত্যেক চিন্ত অপর চিন্ত হইতে পৃথক। এই প্রবল চিন্তাম্রোতেই এই ভ্ৰমাত্মক একত্বের ভাব রাখিয়া যাইতেছে ; সুতরাং তৃতীয় পদার্থের আর আবগুকত কি ? এই যাহা কিছু দেখা যাইতেছে, এই জড়শ্রোত ও এই চিন্তাম্রোত-কেবল ইহাদেরই অস্তিত্ব আছে ; ইহাদের পশ্চাতে আর কিছু ভাবিবার আবশ্বকতা কি ? আধুনিক অনেক সম্প্রদায় বৌদ্ধদের এই মত গ্রহণ করিয়াছেন ; কিন্তু তাহার সকলেই এই মতকে তাহাদেয় নিজ আবিষ্কার বলিয়া প্রতিপন্ন করিতে ইচ্ছা করেন। অধিকাংশ বৌদ্ধদৰ্শনেরই মোট কথাটা এই যে, এই পরিদৃশুমান জগৎই পৰ্যাপ্ত ; ইহার পশ্চাতে আর কিছু আছে কি না, - তাহ অনুসন্ধান করিবার কিছুমাত্র আবশ্বকতা নাই। এই ইস্ক্রিয়গ্রাহ জগৎই সৰ্ব্বস্ব- কোন বস্তুকে এই জগতের আশ্রয়স্কপে কল্পনা করিবার জীবগুক কি ? : সমুদ্বয়ই গুণসমষ্টি। এমন জার্মানিক পদার্থ কল্পনা করিবার কি আবশ্বকতা আছে বাহাতে যেগুলি লাগিয়া থাকিবে?

  • - ցo -