পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
80
ঝাঁশির রাণী ।

রূপে গোলাবর্ষণ করিতে লাগিল। তাহাতে ইংরাজদিগের টিকিয়া থাকা দায় হইল। যাহা হোক্ সেই দিবসের রাত্রিতেই অবসর বুঝিয়া তৃতীয় য়ুরোপীয় পণ্টনের মোহরা অগ্রসর হইল। সমস্ত রাত্রি সহরমধ্যে রণবাদ্যের ভয়ঙ্কর ধ্বনি শুনা যাইতে লাগিল; কেল্লার মধ্য হইতে মশালের আলোক মধ্যে মধ্যে প্রকাশ পাইতে লাগিল; প্রহরীরা বন্দুকের আওয়াজ করিতে লাগিল। তাহাতে বুঝা গেল, সমস্ত রাত্রি ধরিয়া, ঝাঁশির সৈন্যমধ্যে যুদ্ধের আয়োজন চলিতেছে। ইংরাজসৈন্যও সহর-প্রাকারের ৩০০ গজ দূরে তোপ পাতিয়াছিল এবং একটা দেবালয়ের মধ্যে তোপের মঞ্চ (ব্যাটারি) বাঁধিয়াছিল। প্রভাত হইবামাত্র, ঝুঁশি-কেল্লার সুচতুর ও দক্ষ গোলন্দাজেরা আপন আপন তোপে অগ্নি সংযোগ করিল এবং সহরের বস্থিত দুই তিন তাপমঞ্চ হইতে গোলা বর্ষিত হইতে আরম্ভ হইল। প্রথম প্রথম, সেই সকল গোলা ইংরাজ-সৈন্যের মাথার উপর দিয়া যাইতেছিল—তাহাতে কোন ফল হইতেছিল না। কিন্তু পরে, যখন কেল্লাস্থিত “ঘন-গর্জ” নামক তোপের বর্ষণ আরম্ভ হইল, তখন ইংরাজ- দিগের মধ্যে একেবারে হাহাকার পড়িয়া গেল। এই তোপের এই একটা আশ্চর্য গুণ ছিল যে, উহার ধূম-রাশি পূর্ব্ব হইতে দেখা যাইত না। সেই জন্য বিরুদ্ধ পক্ষ সতর্ক হইবার অবকাশ পাইত না। “ঘন-গর্জ” হইতে প্রচণ্ড গোলা-সকল ছুটিয়া সো-সে। শব্দে ইংরাজ সৈন্যের মধ্যে আসিয়া পড়িত। এই জন্য ইংরেজেরা, এই তোপের নাম দিয়াছিল— “হুইলিং ডি”।

 সে যাহা হউক, ২৪ তারিখে, ইংরাজ-সৈন্য, চারিটা তোপমঞ্চ প্রস্তুত করিয়া, দক্ষিণ দিকের কেল্লার উপর গোলা বর্ষণের উদ্যোগ করিল। ২৫ তারিখে তোপের রঞ্জুকে আগুন লাগাইল। কতকগুলি তোপ হইতে “কুলুপী:গোলা” (Shell) একসঙ্গে বর্ষিত হইয়া সহরের মধ্যে আসিয়া পড়িতে লাগিল এবং সহর-বপ্রের উপর লক্ষ্য করিয়া, “পৌণ্ডস”-তোপ