পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬০
ঝাঁশির রাণী ।

বাহির হইয়া পড়িলেন। সেই দরজার বাহিরে ‘তেহরী’ রাজ্যের তোপমঞ্চ স্থাপিত ছিল। তোপ-মঞ্চের লোকেরা বাধা দেওয়ায়, “ইহা তেহরীর ফৌজ, রোজ সাহেবের সাহায্যে যাইতেছে” এই কথা বলিয়া রাণীঠাকুরাণী অতীব কৌশল-সহকারে, সেই স্থান পার হইয়া গেলেন। রাণীঠাকুরাণীর দল চলিয়া গেলে, তাহার পশ্চাতে তাহার যে সৈন্য আসিতেছিল, ইংরাজসৈন্য তাহাদিগের গতিরোধ করিল। এবং উভয় সৈন্যের মধ্যে গোলাগুলি বর্ষণ আরম্ভ হইয়া মহাযুদ্ধ বাধিয়া গেল। এদিকে, একজন দাসী, একজন বন্দুকধারী অশ্বারোহী, আর দশ পেনেরো জন সওয়ার, ইহাদিগের সহিত রাণীঠাকুরাণী, শত্রু-ছাউনীর মধ্য দিয়া একেবারে কাল্পীর রাস্তায় গিয়া পড়িলেন। সেই সময় ইংরাজ-সেনাপতি সহিউ-রোজ রাণীর পলায়নের বৃত্তান্ত জানিতে পারিয়া তাহাকে অনুধাবন করিবার জন্য লেফটেনেণ্ট বৌকরের নেতৃত্বাধীনে কতকগুলি সওয়ার পাঠাইলেন। কিন্তু রাণীঠাকুরাণীর অশ্ব অতীব দ্রুতগামী হওয়ায়, পলকের মধ্যে বিদ্যুৎবেগে ঘোড়া ছুটাইয়া রাণী অদৃশ্য হইয়া পড়িলেন; ইংরাজ সওয়ারেরা বরাবর তাহার অনুসরণ করিয়াছিল; অবশেষে রাত্রি হওয়ায় আর তাহার সন্ধান পাইল না!

 রাণীঠাকুরাণী কেল্লা ছাড়িয়া চলিয়া গেলে, তাহার পরদিন সকালে, তৃতীয় য়ুরোপীয় পণ্টনের অধিনায়ক, লেফটেনেণ্ট বেগ্রী কঁশির কেল্লার উপর আরোহণ করিলেন। গিয়া দেখিলেন, কেল্লার দরজা একেবারে উদঘাটিত; তিনি পরমানন্দে তাহার মধ্যে প্রবেশ করিলেন। ভিতরে গিয়া দেখিলেন, একটি মাত্র মনুষ্য নাই। সমস্ত কেল্লা বিনা আয়াসে তাহার হস্তগত দেখিয়া, নিশ্চিন্তমনে তথায় তাহার বিজয়ধ্বজা স্থাপন করিলেন।

 কর্ণেল মেডোজ টেলর সাহেব, রাণীর পলায়ন-ব্যাপার এইরূপ বর্ণনা করিয়াছেন –“অবশেষে,—তখনও অনেক রাত্রি—কেল্লার যে ভাগটি