পাতা:ঝিলে জঙ্গলে শিকার - কুমুদনাথ চৌধুরী - প্রিয়ম্বদা দেবী.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঝিলে জঙ্গলে শিকার। ১৯ স্থানে সত্বর পাশ্বপরিবর্তন করতে পারে। তাই Paradox আর আমার পদ যুগলের সম্মিলিত ষ্টাতেও যে প্রাণ রক্ষা হতনা সেটা সুনিশ্চিত। হাওদা-শিকার। “হাতী পর হাওদা”, আবার তার উপর নিজে রাজার মত বসে শিকার করা ত খুব আরাম ! হিমালয়ের তরাইয়ে, অসাম আর শ্রীহট্টের জঙ্গলে বাঘ, গণ্ডার, মহিষ, সাস্বর হরিণ প্রভৃতি বড় বড় শিকার, এমন কি তিতির প্রভৃতি ছােট শিকার, করবারও এই একমাত্র উপায়। এই সব জায়ায় ঘন জঙ্গল যেন লম্বা ঘাস আর শরের গভীর সমুদ্র ! এ ঘাস এতই লম্বা যে মাঝে মাঝে হাওদা ছাড়িয়ে ওঠে, আর এম্নি ঘন যে সম্মুখে যে সব প্রকাণ্ড হাতী শিকার সন্ধানে আরােহীকে নিয়ে অগ্রসর হয়, তাদের একেবারে চোখের আড়াল করে ফেলে। প্রতিপদেই গতিরোধ হয়। আর হাতীর পায়ের চাপে যে সব ঘাস ভেঙে পড়ে সে এম্নি মজবুত যে ভাঙ্গার আওয়াজটা পিস্তলের শব্দের মত শেণায় । এই উপায়ে যেদিন তামি প্রথম শিকার সন্ধানে গিয়েছম সে কথা আমার এখনও বেশ মনে আছে। এ যেন চিালীর গাদাঃ হাবাণ সুচ খুজতে যাওয়া ! তবে মস্ত এই প্রভেদ যে এ ক্ষেত্রে সে খুজতে যায় তাকে নাশ হতে হয় না। গান {শায় “ঢ়ডত ফিরি” তাকে ঠিক পাওয়া যা। চল হাতীর উপর দোল খেতে খেতে তা ঠিক রাখা অভ্যাস হতে একটু সময় লাগে। আর তা ছাড়া ঢেউএর মত দোলায়মান ঘন ঘাসের মধ্যে কোন জানোের চলে বেড়াচ্ছে, ভান করে বুঝতেও বিশেষ অভ্যাস আবশ্যক। হাওদা-শিকার ব্যয়সাধ্য। খুব কম লােকেরই এ রকম হাতী রাখবার সামর্থ্য হয় ; আর যে চার জন রাখেন তারাও এ সব হাতীকে রীতিমত শিক্ষা দিবার কষ্ট স্বীকার করেন না। এ ব্যাপারে গুটি কত রীতিমত শিক্ষিত হাতী নিতান্তই দরকার। অায় এ রকম একটা হাতী পাওয়া সহজ নয়। আর যদি পাওয়াই যায় তাহলে তার দাম দিতে সোণার খনি নিঃশেষ করে ফেলতে হয়। তাই বা ক' জনে পায়ে ? হাওদ,-শিকারে কৃতকাৰ্য্য হতে হলে এই রকম হাতী অন্ততঃ ২৪২৫টি ইলে চলে না। কাজেই বুঝেছ, আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ যার নাই তার ভাগ্যে এ শিকার ঘটা দুঃসাধ্য। এক সময়ে আমাদের এই বাঙ্গলা দেশ ভারতের অন্য সব প্রদেশের চেয়ে শিকার ব্যাপারে বেশী উন্নতি করেছিল। দেশের জমিদারদের মধ্যে এ সম্বন্ধে স্বাস্থ্যকর প্রতিদ্বতিা ছিল। শিকার করা তারা গৌরবের কথা মনে করতেন, আর এই সূত্রে পরস্পরে প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন। এখন আর সেদিন নেই বল্লেই হয়। বর্তমান জমিদারবর্গ অনেকেই পাশ্চাত্য আহারে বিহারে, বিলাস ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়েছেন। কলপ দেওয়া কড়া কামিজ ও ‘কলার’ তারা মুনি ঋষির কঞ্জুসাবনের মতই অপৰিহাৰ্য্য মনে করেন। ব্যামশ্র নিষিদ্ধ আহাৰ্য্য সনাতন স্বাস্থ্যকর খাদ্য অপেক্ষা লােভনীয় হয়ে পড়েছে। যে সকল উগ্ৰ পানীয় এক সময় কেবলমাত্র ঔষধার্থে ব্যবহার করবার বিধি ছিল এখন সে সকল তারা নিত্য নমিত্তিক করে নিয়েছেন, আর তার অপরিমিত ব্যবহারই পৌরুষ বলে জ্ঞান করেন! নিঃশব্দ-সঞ্চার মখমল মােড়া বাষ্পষান ব্যতীত চলাফেরা করতে তাদের মন ওঠে না! এই গুলি হচ্ছে আধুনিক জমিদারবর্গের আধ্যাত্মিক পরিমাপ। দৈহিক মাপটি তাদের ইংঞ্জ দর্জির কাছে পাওয়া সহজ। এ দের তরঙ্গায়িত বরবপুল কোট প্যান্টে সাম্য করে রাখা তাদেরই কর্তব্য। কোথায় কখন কি ভাবে এ সন্দৰ্য ফেটে পড়বে তা তুঙ্গে বিয়ে সাবুন হওয়া আবশ্যক। একবার দরবারে T ।