পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (ত্রয়োদশ কল্প প্রথম খণ্ড).pdf/১৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ჯòYა তত্ত্ববোধিনী পত্রিক יוס א .סיס 9יל பயம-கடி বল, কিন্তু আলস্যের এ বল নাই । সম্মুখে দেখিতে উভয়েই স্থৈৰ্য্যগুণবিশিষ্ট । আলস্যও বিপদাপদে নড়িতে চায় না, ধৈর্য্যও বিপদাপদে নড়িতে চায় না ; দুইই যেন এক কিন্তু একবার পরীক্ষা করিলেই তাহাদের গুণাগুণ ধরা পড়ে । ভয়ের মধ্যে বিভিন্ন তা কিরূপ, তাহ স্পষ্টরূপে বুঝিতে পারা যায়। আলস্যের ভিতরে পদার্থ নাই, ধৈৰ্য্যের মধ্যে পদার্থ আছে । আলস্য যেন এই সাধারণ বায়ু। এই সাধারণ আর অম্লজান বায়ু যদি দুইটা পৃথকভাবে পৃথক পৃথক স্বচ্ছ আধারে রক্ষিত হয় তাহা হইলে বাহির হইতে আধারদ্বয় শূন্যবং দেখাইবে, যেন তাহারা দুই একই পদার্থ, কিন্তু পরীক্ষিত হইলেই সে ভুল ভাঙ্গিয়৷ যায় । আমজানের অধীরে যদি একটা অনল তাপলোহিত দীপশলা ক| প্রবেশ করান যায় তাহ হইলে তাহা দপ্‌ করিয়া জ্বলিয় ওঠে, কিন্তু সাধারণ বায়ুর আধারে প্রবেশ করাইলে কোন ফলই হয় না । তাই, আমরা দেখিতে পাইতেছি ধৈর্ঘ্যের মধ্যে কিরূপ শক্তি বিদ্যমান ; বাহিরের প্রতাপের সংঘর্ষে আসিলেই তাহার শ- | ক্তির পরিচয় পাওয়া যায় । ধৈর্য্যের অন্তরে অন্তরে শক্তি প্রবাহিত হয়, তাহ। অন্তঃশক্তি সফল কিন্তু আলস্য শক্তিহীন নিস্ফল । এই শক্তিহীন নিস্ফল আলস্যকে আমাদের সর্বতোভাবে দূর করা উচিত, তাহা হইলেই আমাদিগের শ্রেয় । অালস্য র্যাহারা না পরিহার করিতে সমর্থ হইয়াছেন তাহাদের অন্তঃকরণ সতত জর্জর কম্পিত, তাহারা লোকসমাজে অজ্ঞানাবৃত হইয়া জীবন্ম তবৎ পড়িয়া থাকেন । তাহাদের দেখিয়া, নয়ন সমক্ষে ক্ষীণজ্যোতি নিৰ্ব্বাণোন্মুখ প্রদীপের ন্যায় কৰ্ম্মময় সংসারের অন্তরে অতৃপ্তির উদ্রেক হয়, সংক্রামক রোগের ন্যায় অন্যান্য জনের জীবনকে আক্রমণ করে, সমাজের তাহাতে ক্ষতি বই লাভ হয় না। সেই হেতু অলস হইয়। এ সংসারে থাকা অতিশয় ক্লেশদায়ক ; নীরস পতিত পত্রের ন্যায় ধূলবিলুষ্ঠিত হইয়া অলস ব্যক্তি সংসারে ঘুরিয়া বেড়ায়, কোথাও প্রকৃত আশ্রয় পায় না । এ জগতে অলস অকম্মণ্যের স্থান নাই। প্রকৃতির পানে চাহিয়া দেখ, তাহার কোন কিছু অকৰ্ম্মণ্য অলসভাবাপন্ন হইলেই পড়িয়া যায়, তাহার স্থানে আবার নূতন শোভা জাগিয়া ওঠে ; একটী পদার্থ ও তাহার দেখিতে পাই না, যাহ। শিথিল অলসভাবে অধিক দিন বাচিতে পায়। প্রকৃতির মাঝে কম্মের বিরাম নাই, দিবারাত কৰ্ম্ম চলিতেছে, তাই তাহার এত শোভা । আমরা বাঙ্গালী জাতি এত হীনদশাপন্ন কেন ? তাহার কারণ আমরা ভারি আলস্যপ্রিয়, শয়ন করিতে পাইলে উপবেশন করিতে চাহি না, উপবেশন করিতে পাইলে দণ্ডায়মান হইতে চাহি না । আর আজকালকার স্বাধীন উন্নত জাতিদিগের প্রতি একবার দৃষ্টিপাত কর, দেখিতে পাইবে তাহারা একদণ্ড বসিয়া নাই, তাহাদের কৰ্ম্মের বিরাম নাই, তাহারা সর্বদা কম্মিষ্ঠ হইয়া বলিষ্ঠ হৃদয় লাভ পূর্বক দিন দিন নবপ্রাণে অনুপ্রাণিত হইতেছে, এবং ঈশ্বরের নব নব মহিম আবিষ্কার পূর্বক জীবন সার্থক করিয়া—উন্নতিপথের পথিক হইয়া পুনরায় অন্যান্য জাতিকে তাহীদের লব্ধ জ্ঞানধৰ্ম্মে উন্নত করিবার নিমিত্ত ব্যাকুল হইতেছে। দেখ আলস্যহীন জাতির কত উদ্যম কত উৎসাহ কত আশা ভরসা, আর আলস্যপ্রিয় জাতির কত হতাশা, কত দুঃখ