পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (ত্রয়োদশ কল্প প্রথম খণ্ড).pdf/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

इंॉबर्भ ५४ १७ 19৩ ব্রাহ্ম, প্রত্যেক ব্রহ্মপরায়ণ সাধু ব্যক্তি প্রাণপণে যথাসাধ্য, ফলদাতা ঈশ্বরের হস্তে ফলদানের ভার ন্যস্ত করিয়া, তার করুণার উপর নির্ভর করিয়া, বিন্দু পরিমাণেও ব্রাহ্মধৰ্ম্ম প্রচার করিতে যত্নবান হইতেন, তাহা হইলে ছয়তো আজ দেখিতে পাইতাম যে, কোথায় বঙ্গদেশ, কোথায় পঞ্জাব, কোথায় বম্বে মাদ্রাজ, সকল দেশের সকল লোকে, কি ধনী, কি দরিদ্র, কি বিদ্বান, কি অবিদ্বান, সকলেই সমস্বরে ‘একমেবাদ্বিতীয়ং’ এর জয়ঘোষণা করিতেছে । তাহা হইলে আজ হয়তো দেখিতে পাইতাম যে সমুদয় ভারতবর্ষ ভ্রাতৃসৌহার্দ্যবন্ধনে বদ্ধ হইয়া আত্মার পরিত্রাণের নিমিত্ত একপ্রাণে সমস্বরে সেই বিশ্বপিত ‘পাবনং পাবনানাং” পরমেশ্বরকে ডাকিতেছে । কিন্তু আজ কাল কি দেখিতেছি । অাজ কাল যেন ব্রাহ্মদিগের অন্তরে সেরূপ উৎসাহ নাই, সেরূপ উদ্যম নাই । কি এক বিষময় নিরুৎসাহের ভাব যেন ব্রাহ্ম সাধারণের মৰ্ম্মে মৰ্ম্মে প্রবেশ করিয়াছে । ভাবিয়া দেখিলে ইহার কতকগুলি কারণ সহজেই বুঝা যাইতে পারে। প্রথমতঃ যাহারা আপনাদিগকে ব্রাহ্ম বলিয়া পরিচয় দেন, র্তাহারা তাহাদিগের ধৰ্ম্মসম্বন্ধীয় কর্তব্য কৰ্ম্মে একপ্রকার অবহেলা প্রদর্শন করেন ; র্তাহারা স্বীয় কর্তব্যের গুরুতর ভার সম্যক্রূপে হৃদয়ঙ্গম করেন না। র্তাহারা ইহা বুঝেন না যে যখনই ব্রাহ্ম নাম গ্রহণ করিয়াছেন, তখনই একটা কঠিন দায়িত্ব আপনাদিগের স্কন্ধে ন্যস্ত করিয়াছেন । এই ভাবটী যতদিন কেহ অন্তরে স্থান না দিবেন, ততদিন ব্রাহ্মধৰ্ম্ম প্রচারের আশা তুরাশা মাত্র। অনেকে মনে করেন যে যাহা হইবার তাহ হইয়া গিয়াছে—কিন্তু ভবানীপুর ব্রাহ্মসমাজ рацава তাহা ঠিক নহে। অবশ্য স্বীকার করি যে, অৰ্দ্ধ শতাব্দী পূর্বে কাল্পনিক দেবদেবীর উপাসনাই এই বঙ্গদেশে এবং সমুদয় ভারতবর্ষে ব্রহ্মজ্ঞান প্রচারের প্রধান অন্তরায় হইয়া দাড়াইয়াছিল ; রাজা রামমোহন রায় সেই সময়ে প্রদীপ্ত হুতাশনের ন্যায় উত্থিত হইয়। স্বীয় পণ্ডিতা ও প্রতিভাবলে অকাট্য শাস্ত্র প্রমাণ ও যুক্তি সমূহ প্রদর্শন করিয়া সৰ্ব্ব প্রকার উপধর্মকে একেবারে ভস্মসাৎ করির। ফেলিয়ছিলেন । কিন্তু র্ত হাতেই কি ব্রাহ্মধৰ্ম্ম প্রচারের কাৰ্য্য পর্য্যবসিত হইয়াছিল ? তাহা নহে । উপায় যদি বা দূর ই.া, পাপপুণ্যের একাকার-ভাব-প্রবর্তক নারস শুষ্ক যে অপ্রকৃত বেদান্ত মত, তাহাই আসিয়া উপধৰ্ম্মের স্থান অধিকার করিল। পরমেশ্বরের ইচ্ছায় পূজ্যপাদ মহর্ষি এই শুষ্ক অপ্রকৃত প্রচ লিত বেদান্তমতকে নিরস্ত করিয়া তৎপরি বর্তে বেদান্ত প্রতিপাদ্য সত্যধৰ্ম্ম ব্রাহ্ম ধৰ্ম্মকে প্রতিষ্ঠিত করিলেন এবং ঈশ্বরের প্রতি প্রীতির স্রোত, তাহার প্রতি নির্ভরের ভাব ব্রাহ্মসাধারণের হৃদয়ে জীবন্ত করিয়া তুলিলেন । কিন্তু ইহার পরে আমাদিগের জন্য ও অনেক কাৰ্য্য অবশিষ্ট আছে । জ্ঞানের যুগ গিয়াছে, প্রীতির যুগ গিয়াছে ; এখন কৰ্ম্মের যুগ আসিয়াছে । রাজা রামমোহন রায় ব্রহ্মবিষয়ক জ্ঞান প্রচার করিয়া সকলকে চেতনা প্রদান করিলেন ; পূজ্যপাদ মহর্ষি সাধারণের হৃদয়ে ব্রহ্মপ্রীতি জাগ্রত করিয়া দিয়া সকলকে ব্রহ্মের পথে অার এক পদ অগ্রসর করিয়া তুলিলেন। এখন আমাদিগকে ঈশ্বরের প্রিয় কার্য্য সাধন করিয়৷ দেখাইতে হইবে যে, আমরা ব্রহ্মজ্ঞান, ব্ৰহ্মপ্রীতি হৃদয়ে ধারণ করিতে সক্ষম হছয়াছি । ঈশ্বরের প্রিয়কাৰ্য্য সাধন করিতে