পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দশম কল্প প্রথম খণ্ড).pdf/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

د v۰د spt۴۹چا থাকিবে, তাহার ক্ষয় নাই; উত্তরোত্তর স্বর্গ রাজ্যে উন্নত হইবে ও অনির্বচনীয় স্বগীয় সুখ উপভোগ করিবে । আমাদের ব্রাহ্মধৰ্ম্মে অনন্ত নরকের বিভীষিকা নাই । মঙ্গলময় ঈশ্বর কেবল সংশোধনের জন্য পাপের দণ্ডবিধান করিবেন । স্বর্ণকার যেমন অবিশুদ্ধ স্বর্ণকে দাহাদি প্রক্রিয়া দ্বারা নিৰ্ম্মল ও বিশুদ্ধ করিয়া লয়, সেইরূপ আমাদের দয়াময় পরমপিতা আপন পাপী সন্তানকে উপযুক্ত দণ্ড দিয়া অনুতাপানলে দগ্ধ করিয়া তাহার পাপমলা ভস্ম করিয়া পুনরায় তাহাকে আপন ক্রোড়ে লইবেন এবং অনন্ত জীবন কত সুখে সুখী করিবেন । পুস্তকবিশেষে বা ব্যক্তিবিশেষে ব্রাহ্ম- , ধৰ্ম্মের আদেশ ও উপদেশ নিবদ্ধ নহে । । সকল ধৰ্ম্মগ্রন্থের যার বাক্যই ব্রাহ্মধৰ্ম্মের । অনুমোদিত । ব্রাহ্মধৰ্ম্মে এরূপ বিশ্বাস করে না, যে, ঈশ্বর ব্যক্তিবিশেষের স্কন্ধে বা ওষ্ঠে আবির্ভূত হইয়। র্তাহার ধৰ্ম্ম সম্বন্ধীয় নিগৃঢ় তত্ত্ব সকল ব্যক্ত করাইয়া থাকেন। যদি কোন ব্যক্তি ভ্রমে ও অহঙ্কারে মত্ত হইয়া ব্রাহ্মধৰ্ম্মের দোহাই দিয়া নিজকৃত সৎ অসৎ অনুষ্ঠানের ঈশ্বরকে নিয়ামক বলিয়া ব্যক্ত করে এবং নিজ দোষ ও কপটতা ঈশ্বরের উপর চাপায়, তবে সে ব্যক্তি ব্রাহ্মনামের অযোগ্য । এরূপ ভ্রান্ত ও গবির্বত লোকের সহিত ব্রাহ্মধৰ্ম্মের কোন সম্পর্ক নাই । যে কোন ধৰ্ম্মগ্রন্থ হইতে বা যে কোন ব্যক্তি হইতে যুক্তিসঙ্গত ধর্মের নিগুঢ় তত্ত্ব সকল পাওয়া যায়, ব্রহ্মধৰ্ম্ম তাঁহা অাদরে গ্রহণ করিয়া থাকেন। বালকেরও যুক্তিযুক্ত বাক্য আমরা শ্রদ্ধার সহিত গ্রহণ করিয়া থাকি। কিন্তু জ্ঞানে ও বুদ্ধিতে বৃহস্পতিতুল্য ব্যক্তিরও অযৌক্তিক কথা গ্রহণ করি না। ধৰ্ম্মগ্রন্থবিশেষকে অথবা ব্যক্তিবিশেস্বকে ব্ৰাহ্মধৰ্ম্ম অভ্রান্তু বলিয়া স্বীকার করে মেদিনীপুর ব্রাহ্মসমাজ SS না । জগংগ্ৰন্থই ব্রাহ্মধৰ্ম্মের অভ্রান্ত গ্রন্থ । নীল নভস্তল ব্রাহ্মধৰ্ম্মের উপদেশের লেখ্য পত্র । স্বয়ং ঈশ্বর নিজ হস্তে তাঁহাতে ব্রাহ্মধৰ্ম্মের অভ্রান্ত তত্ত্ব সকল সুস্পষ্ট করিয়া লিখিয়া দিয়াছেন। সূর্য চন্দ্র গ্রহ তার তাহার হস্তের উজ্জ্বল অক্ষর। তিনি কোথায় না তঁাহীর তত্ত্ব সকল লিখিয়া রাখিয়াছেন। ময়ূর-শরীরের বিচিত্র বর্ণও তাঙ্গর হস্তের বর্ণাবলি। তুমীরধবল উত্তঙ্গ গিরিশৃঙ্গ ও তাহার লেখনীপ্রসূত বৃহদক্ষর | দলিতাঞ্জনসন্নিভ সাগর-নীলিমাও র্তাহার লিখিত । তড়িজড়িত শ্যামল মেঘ মালা ও র্ত হার হস্তের বর্ণমালা । জগতের সৰ্ব্বত্র তাহার লেখনী-বিনিগত অক্ষর সকল ব্রাহ্মধৰ্ম্মের অভ্রান্ত তত্ত্ব প্রকাশ করিতেছে । বিশেষতঃ মলুয্যের আয়াতে, মনুষোর সহজ জ্ঞানে ঐ সকল তত্ত্ব যেমন প্রকাশিত এমন অন্যত্র নহে । ব্রাহ্মধৰ্ম্ম আদেশ করে, ঈশ্বরে প্রীতি ংস্থাপন কর, অন্তর পবিত্র হইবে, অতুল আননদ উপভোগ করিবে । ব্রাহ্মধৰ্ম্ম যেমন ঈশ্বরে প্রেম করিতে আদেশ করে, সেইরূপ জগতের হিতসাধন-ব্রতপালন করিতে উপদেশ দেয়। ব্রাহ্মধৰ্ম্ম আদেশ করে,সৰ্ব্বজীবে দয়া কর, সকল মনুষ্যের উপর ভ্রাতৃভাব ংস্থাপন কর । ব্রাহ্মধৰ্ম্ম-সরল ও সচেরিত্র হুইতে আদেশ করে । ব্রহ্মধৰ্ম্ম অভিমান ও ক্রোধ ত্যাগ করিতে উপদেশ দেয় । ব্রাহ্মধৰ্ম্ম বিনয় ও নম্রতা অভ্যাস করিতে ভূয়োভূয়: উপদেশ করে। ব্রাহ্মধৰ্ম্মের আদেশ ও উপদেশ সকল যেন মুখে মুখেই না থাকে। আমরা তাহা কার্য্যে পরিণত করিতে যেন প্রাণপণে যত্ন ও চেষ্টা করিতে পারি। আমরা কেবল পার্থিব সুখে ও বিষয় বিভবে মুগ্ধ হইয়া না থাকি । এই ক্ষণভঙ্গুর অস্থায়ী মুখে আচ্ছন্ন |