পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (নবম কল্প তৃতীয় খণ্ড).pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

:ృు এরূপ গম্ভীর ও উচ্চ ভক্তিভাবের স্তোত্র অন্য দেশের ধৰ্ম্মগ্রন্থে পাওয়া সুকঠিন । জগতের সহিত ঈশ্বরের সম্বন্ধ-বিষয়ে ভগবদগীতার কি মত তাহ অনুসন্ধান করিতে এক্ষণে আমরা প্রবৃত্ত হইতেছি। ভগবদগীতার মতে ঈশ্বর জগৎ হইতে পৃথক। জগৎ দুই প্রকার পদার্থে বিভক্ত; চেতন ও অচেতন । ঈশ্বর চেতন ও অচেতন পদার্থ সকল হইতে ভিন্ন । “দ্বাবিমেী পুরুষে লোকে ক্ষরশচাক্ষর এব চ। ক্ষবঃ সৰ্ব্বণি ভুতানি কূটস্থোৎক্ষর উচ্যতে | উত্তমঃ পুরুষ স্তন্যঃ পরমাত্মেত্যুদাহৃত: । যোলোক কুয়মাবিশ্য বিভক্ত্যব্যয় ঈশ্ববঃ ॥ যস্মাৎ ক্ষরমর্তীতোই যমক্ষরাদপি চোকমঃ । অ’ তাইম্মি লোকে বেদে চ প্রথিত: পুরুষোত্তম: | "লোকে দুই পুরুষ প্রসিদ্ধ আছেন, এক ক্ষর অন্য অক্ষর। সকল পদার্থ ক্ষর আর কুটস্থ অর্থাৎ ক্ষেত্ৰজ্ঞ জীব, যিনি ভোক্ত তিনি তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা J m | | I o t

  • o t

| অক্ষর হয়েন । এই ক্ষর এবং অক্ষর হইতে । সিনি ভিন্ন তিনি উত্তম পুরুষ, তাহাকে বেদে পরমাত্ম কহে, তিনিই সৰ্ব্বমিমন্ত নিৰ্ব্বি- | কার এবং সকল প্রাণির হৃদয়ে অধিষ্ঠান করিয়| সকলকে পালন করেন । তিনি জড় পদার্থের অতীত অতএব লোকে এবং লেদে তাহাকে পুরুষোত্তম কহে ।” ভগবদগীতার মতে ঈশ্বর জগৎ হইতে ভিন্ন কিন্তু তাহার কোন কোন স্থানে জগৎ অ}র ঈশ্বর এক বলিয়া নে উল্লেখ আছে তাহার কারণ এই যে, মনুস্য যখন ঈশ্বরের অপরিচ্ছিন্নত সৰ্ব্বব্যাপিত্ব ও তাছার উপর জগতের একান্ত নির্ভর, অর্থাৎ এত নির্ভর যে ঈশ্বর যদি আপনাকে জগৎ হইতে পৃথক করিয়া লয়েন তাহা হইলে জগতের কিছুই থাকে না, গাঢ়রূপে আলোচনা করেন স্বভাবতঃ র্তাহীর মুখ হইতে যে সকল বাক্য নিঃস্বত হয় নাহ৷ সৰ্ব্বেশ্বরবাদের ন্যায় প্রতীয়মান হয় । . . | a कब्र, ७ छाँ१ ঈশ্বরকে অবলম্বন করিয়া সমস্ত জগৎ স্থিতি করিতেছে । তিনি যদি আপনাকে জগৎ হইতে পৃথক করিয়া লয়েন তবে সকল বস্তুই বিপৰ্য্যস্ত ও বিপ্নত হয় । ভগবদগীতার সপ্তম অধ্যায়ের সপ্তম শ্লোকে লিখিত আছে। মত্ত: পরতরং নান্যৎ কিঞ্চিদস্তি ধনঞ্জয় । ময়ি সৰ্ব্বমিদং প্রেতিং সূত্রে মণিগণাইব ॥ “হে ধনঞ্জয় ! আমি অপেক্ষা আর শ্রেষ্ঠ কেহ নাই। যেমন গ্রথিত মণি সকল সূত্রকে আশ্রয় করিয়া থাকে সেইরূপ এই জগৎ আমাকে তাবলম্বন করিয়া অবস্থিতি করি তেছে । ” কি সুন্দর উপমা ! মণি যেমন সুত্রেতে গ্রথিত থাকে তেমনি এই সূৰ্য্য 5ਲ਼ গ্ৰহ নক্ষত্র ধূমকেতু সকলই সেই সনাতন অনাদি পুরুমে গ্রথিত হইয়া আছে । যেমন মণি সূত্র হইতে বিযুক্ত হইলে ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত হইয় পড়ে তেমনি ঈ ঈশ্বর হইতে এই সূৰ্য্য চন্দ্র গ্রহ নক্ষত্র সকল বিযুক্ত হইলে ইত | | | | } স্ততঃ বিক্ষিপ্ত হইয়। একেবারে ধ্বংশ প্রাপ্ত হয় । জগত ঈশ্বরকে অবলম্বন করিয়া স্থিতি করিতেছে কিন্তু ঈশ্বরের সম্যকৃ সত্তা জগতে বদ্ধ নাই। তিনি যেমন জগত ব্যাপিয়া আছেন তেমনি জগতের অতীত হইয়াও স্থিতি করিতেছেন। তাহার অন্ত নাই, তিনি অনন্ত পুরুষ । “একাংশেন স্থিতোজগৎ । ” জগৎ কোথায় उँींशद्र এক কোণে পড়িয়া আছে । "একাংশেন স্থিতোজগৎ” ভগবদগীতার এই বাক্য ঈশ্বরের অনন্ত-স্বরূপ কি আশচর্য্যরূপে প্রকাশ করিতেছে ! কেবল প্রাচীন আর্য্যেরাই এইরূপে ঈশ্বরের অনন্তস্বরূপ কীৰ্ত্তন করিতে পারিতেন । জগৎ ঈশ্বরকে অবলম্বন কল্পিয়া স্থিতি করিতেছে, কিন্তু ঈশ্বর কোন সাংসারিক কার্য্যে লিপ্ত নছেন, তাহার অধিষ্ঠানে নিত্য নিয়মানুসারে জগতের সকল পদার্থ কার্য্য