পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (নবম কল্প তৃতীয় খণ্ড).pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ه « ۹ دهtraf অল্প প্রদর্শন করেন নাই। ঈশ্বরের এরূপ মহোচ্চ বর্ণনা কেবল প্রাচীন আর্য্যের করিতে পারিতেন । ঈশ্বর আমাদিগের পরম আবাস-স্থান; সকল স্থানেই তাহার চক্ষু, তিনি সকল দেখিতেছেন; সকল স্থানেই র্তাহার কর্ণ, তিনি সকল শুনিতেছেন; তিনি সকল ইন্দ্রিয়ের গুণ-প্রকাশক, কিন্তু নিজে সকল ইন্দ্রিয়-বিবর্জিত, তিনি নিগুণ অর্থাৎ ভৌতিক ও মানসিক গুণবর্জিত, অথচ তিনি সকল গুণের প্রতিপালক; তিনি দূরে, তিনি নিকটে; তিনি সকল পদার্থের কারণ, অতএব তিনি সকল পদার্থ হইতে ভিন্ন নহেন; সকল পদার্থ তাহার কার্যা, অতএব তিমি সকল পদার্থ হইতে ভিন্ন; তিনি জ্যোতির জ্যোতিঃ, সকল জ্যোতিস্থান পদার্থ তাহাকে অবলম্বন করিয়া প্রকাশিত হইতেছে; তিনি মা কলের হৃদয়ে অবস্থিতি করিতেছেন। হৃদয় যেমন আমাদিগের নিকট পদার্থ এমন আর অন্য কোন পদার্থ নাই, তিনি হৃদয়ে অবস্থিতি করিতেছেন, অতএব তিনি যেমন আমাদিগের নিকট এমন আর কেহ নহেন । মনুষ্য ইহা অপেক্ষ ঈশ্বরের স্বরূপ উচ্চরূপে বর্ণনা করিতে পারে কি ন সন্দেহ । আমার কোন বন্ধু ভগবদগীতার অন্তর্গত একটা স্তোত্রের সারাংশ উদ্ধত করিয়া একটি স্তোত্রসার রচনা করিয়াছেন। তিনি তাহাতে একটিও নূতন শব্দ ব্যবহার করেন নাই কেবল গীতার উল্লিখিত স্তোত্রের সার শ্লোক সকল লইয়া তাহ রচনা করিয়াছেন । সে স্তোত্রসারটি এই— ত্বমক্ষরং পরমং বেদিতব্যং ত্বমস্য বিশ্বস্য পরং নিধানম । ত্বমব্যয়ং শাশ্বতধৰ্ম্মগোপ্ত। সনাতনস্থং পুরুষোমতোমে । অনাদিমধ্যত্বমনন্ত বীৰ্য্যমনস্তবাহুং শশিসূৰ্য্যনেত্রম । পশ্যামি ত্বাং দীপ্তহুতাশবক্তং স্বতেজসা বিশ্বমিদং তপস্তম্ ॥ ভগবদগীত। বিষয়ে বক্তত t | } | ত্বমাদিদেবঃ পুরুষ: পুরাণস্বমসা বিশ্বস্য পরং নিধানং । বেত্তাসি বেদ্যঞ্চ পরঞ্চ ধাম ত্বয়া ততং বিশ্বমনস্তরূপ ৷ নমোনমস্তেহস্তু সহস্ৰকৃত্যঃ পুনশ্চ ভূয়োছপি নমোনমস্তে । নমঃ পুরস্তাদথ পৃষ্ঠতস্তে নমোস্তু তে সৰ্ব্বতএব সৰ্ব্ব । অনন্তবীৰ্য্যামিতবি ক্রমস্থং সৰ্ব্বং সমাপ্তোহসি ততোসি সৰ্ব্বং । পিতাসি লোকস্য চরাচরস্য ত্বমস্য পূজাশ গুরুগরীয়ান ॥ ন ত্বৎসমোই স্ত্যভাধিক: কুতোইন্যে লোকত্রয়েপ্য প্রতিম প্রভাব: । তস্মাৎ প্রণমা প্রণিধাম কায়ং প্রসাদয়ে ত্বামহমীশ মীড্যম ॥ “তুমি মুমূক্ষ্ম ব্যক্তির জ্ঞাতব্য পরম ব্রহ্ম, তুমি এই বিশ্বের উৎকৃষ্ট আশ্রয়, তুমি সনাতন ধৰ্ম্মের রক্ষক, ও নিত্য পুরুষ। তোমার আদি, মধ্য ও অন্ত নাই এবং তোমার প্রভাবও অনন্ত । আমি দেখিতেছি, তোমার বাহু অনন্ত, চন্দ্র-সূৰ্য্য তোমার নেত্র এবং প্রদীপ্ত হুতাশন তোমার মুখ । তুমি স্বতেজে এই বিশ্বকে প্রদীপ্ত করিতেছ। তুমি আদি দেব, পুরাণ পুরুষ, তুমি এই বিশ্বের পরম নিধান, তুমি জ্ঞাত ও জ্ঞেয়, তুমি পরম ধাম। হে অনন্তস্বরূপ! তুমিই এই বিশ্বকে ব্যাপিয়া আছে । তোমাকে সহস্ৰ বার নমস্কার, পুনরায় তোমাকে সহস্র বাব নমস্কার ; হে সৰ্ব্বাত্মন! তোমাকে সম্মুখে নমস্কার, তোমাকে পশ্চাতে নমস্কার । তুমি অনন্তপ্রভাব, তুমি অমিতবিক্রম, সকলই তোমার আয়ত্তাধীন, অতএব তুমি সর্বস্বরূপ । তুমি চরাচর ভুবনের পিতা, তুমি পূজ্য ও সৰ্ব্বাপেক্ষ গুরু; ত্রিলোকে তোমার সমান কেহ নাই, তোমা অপেক্ষা অধিকও কেহ নাই। তোমার প্রভাব অসীম। তুমি স্তবনীয় ঈশ্বর, এই জন্য আমি তোমাকে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করিতেছি, তুমি আমার প্রতি প্রসন্ন হও ।”