পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (নবম কল্প তৃতীয় খণ্ড).pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

אגו ל אזיts কুসংস্কার দূরে প্রস্থান করিয়াছে। “ আমিও তাহাই বলি, কিন্তু তাহার সঙ্গে আর একটি কথা জুড়িয় দিই, সে কথা এই “কার্য্য-সামর্থ্য যেখানে তিলমাত্রও নাই সেখানে জ্ঞানগৰ্ব্ব ভাল দেখায় না।” ইহা আমি স্বীকার করি যে, জ্ঞান অতি শ্রেষ্ঠ পদার্থ, জ্ঞানের যত উন্নতি হয ততই ভাল, কিন্তু ইহাও বলি যে, জ্ঞান অতি গুরুপাক বস্তু । র্যাহীদের শরীরে শক্তি আছে, মনে তেজ অাছে, হৃদয়ে প্রেম আছে, তাহারদের অন্তঃকরণেই জ্ঞান রীতিমত পরিপাক প্রাপ্ত হয় ; অপর ব্যক্তিদিগের তাহা ন হইয়। বরং হিতে বিপরীত হয় । আমারদের দেশে জ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে যদি ভাবের উন্নতি হইত তাহা হইলে আমারদের দেশের যথার্থ শ্ৰী বুদ্ধি হইতেছে বা হইতে পরিবে তাহর মূল পত্তন হইতেছে একথা অসঙ্কোচে বলিতে পারিতাম । কিন্তু তাক্ষেপের বিষয় এই মে, আমারদের নব্য সম্প্রদােয়দিগের মধ্যে যেমন জ্ঞানের চর্চ। অাছে, তেমন ভাবের চর্চা নাই, এজন্য দেশানুরাগ যে কাছাকে বলে তাহাও তাহীদের অনেকের নিকট অপ্রকাশ রহিয়াছে । কি আক্ষেপের বিযয় যে, অনেক কৃতবিদ্য ব্যক্তির মুখে আমি পুনঃ পুনঃ এইরূপ কথা শুনিয়াছি যে, “জাতীয় ভাব কি, তাছা আমাকে বুঝাইতে পার ? ” তাহারা যে জাতি শব্দের অর্থ জানেন না, বা ভাব শব্দের অর্থ জানেন না, তাহা নহে ; অথবা তাহার যে শব্দার্থ জানেন ভাবার্থ জানেন না তাহাও নহে। স্বজাতির প্রতি মনের যে একটা টান তাহকেই জাতীয় ভাব বলি, ইহাও তাহাদের অবিদিত নাই ; তাহাদের জিজ্ঞাসা কেবল এষ্ট যে, আমরা স্বজাতীয় ব্যক্তিদিগকে যেমন ভালবাসি বিজাতীয় ব্যক্তিদিগকেও তেমনি ভালবাসি, এ অবস্থায় জাতীয় ভাব দেশানুরাগের প্রকৃত পদ্ধতি কিৰূপ p ゞ(。 একথা ব্যবহার করিবার বিশেষ কি প্রয়োজন তাহাই আমরা বুঝিতে চাই। ইহারদের প্রতি আমার বক্তব্য এই যে, শুদ্ধ ভাল বাস। হইলেই হয় না,পত্রিভেদে ভালবাসার মাত্রাভেদ নিতান্তই প্রয়োজন । যদি বলি যে, শুভাকাঙক্ষী বয়োবৃদ্ধ লোকদিগকে ভক্তি করিবে, তাহতেই ত বলা হয় যে, তোমার পিতামাতাকে ভক্তি করিবে, তবে কেন বালকদিগকে উপদেশ দিবার সময় অগ্ৰে বলি যে, পিতামাতাকে ভক্তি করিবে, পরে বলি যে, গুরুজনদিগকে ভক্তি করিলে এক অধি জন নৈয়ায়িক পণ্ডিত হয় ত উহার মধ্য হইতে দ্বিরুক্তি-দোষ বাহির করিতে চেষ্টা পাইবেন, কিন্তু, তদ্ভিন্ন আর সকলেই বলিবেন যে, ঐরূপে উপদেশ দেওয়াই কৰ্ত্তব্য । যদি বলি যে, সকল মনুয্যের প্রতি অনুরাগী হও, তাহাতেই ত বলা হয় যে,স্বদেশীয় ব্যক্তিগণের প্রতি ও অনুরাগী হও তবে কেন অগ্ৰে বলি সে স্বদেশের প্রতি অনুরাগী হও, তাহার পরে বলি যে সকল দেশীয় মনুয্যের প্রতি অনুরাগী হও । যদি বল যে, অন্যান্য গুরুজনকে যেরূপ ভক্তি করি, পিতামাতাকে ঠিক সেইরূপ ভক্তি করি, তবে তাহাতে দাড়ায় এই যে, পিতৃমাতৃভক্তি যে কি তাহা তুমি জান না । যে ব্যক্তি অন্যান্য গুরুজন অপেক্ষ পিতামাতাকে অধিক করিয়া ন! মানে, তাহার পিতৃভক্তি বা মাতৃভক্তি কেবল একটা কথার কথা মাত্র। এইরূপ যদি অন্যান্য জাতি ব দেশ অপেক্ষা আপনার জাতি বা দেশের প্রতি আমারদের অধিক অনুরাগ না থাকে, তাহা হইলে আমারদের দেশীনুরাগ কেবল একটা কথার কথা মাত্র, তাহা ভিন্ন আর কিছুই নহে। যাহার। এই কথা হৃদয়ের সহিত বলিতে পারেন “জননী জন্মভূমিশচ স্বর্গাদপি গরীয়সী” জননী এবং জন্মভূমি স্বৰ্গ হইতেও গরীয়সী, তাহার