পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (নবম কল্প তৃতীয় খণ্ড).pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○ > এই ভগবদগীতা—এই ঈশ্বরবিষয়ক সঙ্গীত—অনুপম,অদ্বিতীয় । বোধ হয়,ঈশ্বরবিসয়ে এমন উচ্চ ধাতুর সঙ্গীত কেহ কখন করে নাই । যখন ভগবদগীত পাঠ করা যায় তখন বোধ হয় যে, দিব্যলোকবাসী কোন পুরুষ অন্তরীক্ষে ঈশ্বরবিষয়ে গান করিতেছেন আর মর্ত্যলোক স্তব্ধ হইয়া শুনিতেছে । আহা! কি অমৃতময় সঙ্গীত কর্ণকুহরে প্রবেশ করিল ! এমন সঙ্গীত ত কখন শ্রবণ করি নাই । হে সংসার-যন্ত্রণায় তাপিত ব্যক্তিরা । এই সঙ্গীত শ্রবণ কর ও যাহা শ্রবণ করিবে তাছা কার্য্যে পরিণত কর, তাহ। হইলে তোমাদিগের সংসার যন্ত্রণ দূরীভূত হইবে, তোমাদিগের অধি-ব্যাধি বিগত হইবে, তোমরা ঈশ্বরকে প্রাপ্ত হইয়। আপ্তকাম হইবে স্বর্গস্থিত উপনিষদপ্রেরিত এই দেবদূত অমৃতময় সঙ্গীতে অতি সুগভীর রূপে পরমাত্মার স্বরূপ বর্ণনা করিতেছেন, অতি আশ্চৰ্য্যরূপে তাত্মার স্বরূপ প্রতিপাদনা করিতেছেন, যোগের সহিত কৰ্ম্মসংযোগ করিতে উপদেশ দিতেছেন এবং সাংসারিক দুঃখক্লেশের অতীত হইয়। সেই মহোচ্চ ব্রহ্মরোগে অারোহণ করিতে বলিতেছেন, যাহা অবাতকম্পিত দীপশিখার ন্যায় বিষয় কাৰ্য্য সম্পাদন সময়েও ঈশ্বরের দিকে মনকে স্থির ভাবে রাখে । ঐ দেবদূত কঠিন উপদেষ্ট। নচেন ; এমন স্নেহ পূর্ণ উপদেষ্ট। অল্পই প্রাপ্ত হওয়া যায় । যিনি অনেক দিন যোগ সাধন করিয়া যোগভ্ৰষ্ট হইয়া নিরাশপঙ্কে পতিত হইয়াছেন তাহাকে পিতার স্যায় ঐ দেবদূত বলি @び図* | “নহি কল্যাণকং কশ্চিৎ দুৰ্গতিং তাত গচ্ছতি’ যে ব্যক্তি অল্পমাত্র ধৰ্ম্ম করিয়াছে তাহাকেও এই দেবদূত মধুর আশ্বাসে ধৰ্ম্মপথে আরও অগ্রসর হইতে প্রোৎসাহিত করিতেছেন । তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা 16 * • कन्न, ७ छोन “স্বল্পমপ্যস্য ধৰ্ম্মস্য ত্রায়তে মহতোভয়tৎ” যে আদবেই ধৰ্ম্মসাধন করে না, যে হন্ডুরাচার, যে সমস্ত পৃথিবীর অবজ্ঞাত ও ঘৃণিত, তাহাকেও এই করুণাময় দেবগাথক অবজ্ঞ বা ঘৃণা করেন না, তাহাকেও তিনি এই কথা বলিয়া ধৰ্ম্মপদবীতে আরোহণ করিতে উপদেশ দিতেছেন । “অপি চেৎ সুদারাচরোভজতে মামনন্যভাক । সাধুরেব স মন্তব্যঃ সম্যকুব্যবসিতো হি স: | ক্ষিপ্ৰং ভবতি ধৰ্ম্মাত্মা শশ্বচ্ছাস্তিংনিযচ্ছতি । কোন্তেয় প্রতিজানীহি ন মে ভক্ত:প্ৰণশ্যতি ॥” কি অমৃতময় বাক্য ! কি কারুণ্য ৷ কি স্নেহ ! ভগবদগীত গঙ্গানদীর ন্যায়। যেমন বিমলসলিল। জাদুবী ভারতবর্ষের অসংখ্য লোকের তৃষ্ণ শান্তি করিতেছেন তেমনি এই ভগবদগীত। ভারতবর্ষের অনেক লোকের জ্ঞানতৃষ্ণ শান্তি করিতেছেন । যেমন গঙ্গানদীর জল অনেককে জীবন দান করিয়াছে ও করিতেছে সেইরূপ এই ভগবদগীতা গ্রন্থ অনেক লোককে ধৰ্ম্মজীবন দান ও দেবা নু প্রাণিত করিয়াছেন ও করিতেছেন । এই ভগবদগীতার নিকট ভারতবর্ষ কত উপকৃত তাহ। বলা যায় না । আমাদিগের কত পৈতৃক ধন আছে সংখ্যা করা যায় না ; সেই পৈতৃক ধন অবহেলা করিয়া আমাদিগের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করিয়া বেড়াইবার প্রয়োজন নাই । আমি যে ধনের কথা বলিতেছি তাহা স্বর্ণ নহে, রজত নহে, হীরক নহে তাহা সেই জ্ঞানরূপ ধন যাহা সংশয় ও মহান্ধকার নষ্ট করিয়া সেই পরম পথ প্রদর্শন করে । সভ্যগণ ! তোমরা এই ধন লাভ কর তাহা হইলে অর্জুন যেমন গীতার শেষে শ্ৰীকৃষ্ণকে বলিয়াছিলেন তোমরাও সেইরূপ ঈশ্বরকে বলিতে সক্ষম হইবে। “নস্টোমোহঃ স্মৃতিলন্ধ ত্বৎপ্রসাদাম্ময়াচু্যত স্থিতেীন্মি গতসন্দেহুঃ করিধ্যে বচনং তব ।”