পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (নবম কল্প তৃতীয় খণ্ড).pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

br ** মার্থ জ্ঞান-বিবর্জিত কাম্য-কৰ্ম্মযাজক ষোড়শ ঋত্বিক, যজমান ও তৎপত্নীকে অনিত্য-কৰ্ম্মসম্বন্ধ}ধীন বিনাশশীল কহিয়াছেন । পশ্চাৎ সমাহার করিয়াছেন, “পরীক্ষা লোকান্‌ কৰ্ম্মচিন্তান বাহ্মণোনিৰ্বেদ মায়ান্নাস্ত কুতঃ কৃতেন । তদ্বিজ্ঞানার্থং স গুরুমেবাভি. গুচেষ্টুং" বেদবাদ-বিরত, ফলাকাঙক্ষী-বর্জিত ব্রহ্মজ্ঞানী ব্যক্তিই ব্রাহ্মণ শব্দের বাচ্য। "ব্রাহ্মণসৈাব বিশেষতঃ অধিকার: সৰ্ব্বত্যাগেন ব্রহ্মবিদ্যায়াং ঐতি ব্রাহ্মণগ্রহণ" কদলীগৰ্ব্বদং অসার জলবুদবুদ ফেণসমান প্রতিক্ষণ প্রধ্বংসমান বৈদিক কৰ্ম্ম সকল ও সেই কৰ্ম্মনিম্পাদিত-ফল-স্বরূপ পিতৃ দেব ও স্বৰ্গলোক সকল পরীক্ষ। পূৰ্ব্বক এবং এই সংসারে কিছুই নিস্ত। নহে ও তৎসমূহ দ্বারা নিত্য বস্তু প্রাপ্তি হয় না জানিয়া বৈরাগ্য অশ্রয় করিবেন। - পরে তিনি যাগ-যজ্ঞাদি ক্রিয়া-কৰ্ম্মে ও ফল-প্রার্থনায় জলাঞ্জলি দিয়া অভয় শিব তাকৃত নিত্য পরম পদের জ্ঞানলাভার্থে শৰ্মদমাদিসম্পন্ন শ্রীতির মৰ্ম্মজ্ঞ গুরুর নিকটে গমন করিবেন। এতাবত ধৰ্ম্মক্রিয় ও তাহার ফলকে অনিত্য জ্ঞান করা ও তাদৃশ ক্রিয় দ্বারা নিত্য পদার্থকে লাভ করা যায় না জানিয়া তৎসমস্ত ত্যাগ করাই চিত্তশুদ্ধির নামান্তর । অর্থাৎ বাসন ও বাসনা-জন্য ক্রিয়ার ত্যাগেই চিন্ত বিশুদ্ধ হয়। অথবা ইহাই বল যে, ক্রিয়। যদি ফল-কামনা-বর্জিত হয় তাহাতেও চিত্তশুদ্ধি প্রতিষ্ঠিত থাকে। কিন্তু নাস্তিকতা করিয়া কৰ্ম্মত্যাগ করিলে অথবা অস্ত্যজ লোকের ন্যায় কৃতকৃত শাস্ত্র জ্ঞানের অভাবে ক্রিয়ায় বিমুখ থাকিলে যে, চিত্তশুদ্ধি হইবে এমত উক্ত হয় নাই । কেন তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা । ० रुझ, ७ चांभ না সেই সকল মূঢ়ের ধৰ্ম্ম কাৰ্য্যই ত্যাগ করে, কিন্তু বাসন ত্যাগ করিতে হয় তাহ জানে না। বাসনা-ত্যাগই চিত্তশুদ্ধির মূল। তাহার সহিত ধৰ্ম্মকৰ্ম্ম-ত্যাগ অপরিহার্ষ্য। এইরূপ বাসনা-ত্যাগ-জন্য যে কৰ্ম্ম-সন্ন্যাস তাছ ত্ৰিবিধ | প্রথমতঃ ধৰ্ম্ম-ক্রিয়া সকল করিতে করিতে পরীক্ষা দ্বারা তাহার ফল সুখভোগ অথবা স্বৰ্গাদিকে অনিত্য ও মোক্ষের বাধক জ্ঞান করত তাহা হইতে নিবৃত্ত হইয়া, মোক্ষের অনাৰ্বত-দ্বার-স্বরূপ, নিত্য-তত্ত্ব-স্বরূপ ধ্রুব সত্য-স্বরূপ, অভয়-মঙ্গল-স্বরূপ, শান্তির নিকেতন-স্বরূপ, নিরঞ্জন ব্রহ্মের লাভে মগ্ন হওয়া । দ্বিতীয়তঃ, ধৰ্ম্মকাৰ্য্য সমূহকে লোকশিক্ষার নিমিত্তে বা তাঁহাতে ঈশ্বরের তাবিভাব অাছে এই বোধে পালন কর। অথচ স্বীয় বামমরি অন্ত হওয়ায় তাদৃশ ক্রিয়ার ফল ঈশ্বরে সমপর্ণরূপ ত্যাগ করা । তৃতীয়তঃ জন্মলিধি কোন ক্রিয়া-কৰ্ম্ম ন করিম, পুৰ্ব্ব জন্মের কৰ্ম্ম-সন্ন্যাস অথবা সংসঙ্গ জন্য বে দান্ত-বিজ্ঞান লাভ পূর্বক একেবারেই ক্রিয়াহীন থাকা এবং লোক-শিক্ষার নিমিত্ত অথচ ঈশ্বরীর্থে কৰ্ম্ম করা উচিত জানিয়াও ব্রহ্মজ্ঞানালোচনায় ক্রিয়া-সম্বন্ধাধীন বিক্ষেপের ভয়ে ক্রিয়া না করা । এই ত্ৰিবিধ কৰ্ম্মসন্ন্যাসের মধ্যে ব্রহ্মনিষ্ঠ গৃহস্থের পক্ষে যথাসম্ভব দ্বিতীয় প্রকার সন্ন্যাস অবলম্বনই শ্রেষ্ঠ কল্প বলিয়া অভিহিত হইয়াছে। গীতা, স্মৃতি প্রভূতি মহা মহা শাস্ত্রে তাহারই প্রশংসা করিয়াছেন। জনকাদি রাজর্ষিগণ সেই পক্ষই অবলম্বন করিয়াছেন। ঈশ্বরের জগৎপালনের নিয়মও তাঁহাই উপদেশ দিতেছে। নিজগৃহের ও স্বদেশের বিভিন্নাধিকারি ব্যক্তিদিগকে নাস্তিকতা ও জালস্ত হইতে ত্রাণ করিবার নিমিত্তে যুক্তি ও বিচার তাছারই অনুমোদন করিতেছে 1. "ব্রহ্মনিষ্ঠোগৃহস্থঃ । স্যাৎ তত্ত্বজ্ঞানপরায়ণ যদযৎকৰ্ম্ম প্রকুৰীত ।