পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (পঞ্চম কল্প দ্বিতীয় ও তৃতীয় খণ্ড).pdf/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তত্ত্ববোধিনী পত্রিক ত্রেরও সহিত আমাদের সম্বন্ধ আছে, কিন্তু অামাদের স্রষ্ট পাতা ঈশ্বরের সহিত তাহীদের মতে কোন সম্বন্ধই নাই। ষে সময় ধৰ্ম্ম ধৰ্ম্ম করিয়া বৃথা ক্ষেপণ করিবে, সে সময় বিদ্য শিক্ষা করিলে উপকার দর্শে ; সংসারের প্রতি মন দিলে কাৰ্য্য দেখে । সংসারের উন্নতি কর ; লোকের উপকার কর ; আমোদ প্রমোদ কর; এই তাহীদের উপদেশ । সার বিষয়কে অবহেলা করিয়া কল্পনাতেই নৃত্য করা, ঈশ্বর ধৰ্ম্ম পরকাল যাহার মীমাংস। কস্মিন কালেও হয় নাই, চাহতেই কাল ব্যয় করা অপেক্ষ তাহাদের মতে অ’ কিছুই অনিষ্টকর নহে। তাহরণ নিরপেক্ষ থাকিলেও এ দেশের মসল, কিন্তু তাহ না থাকিয় তাহার তাপনদের দলে অনেককেই আকর্ষণ করিতে ড়েন । অতএব দেখ সকলেই আমাদের বিপক্ষ । আমাদের সহায় অতি অলপ | অtমাদের স্তে যে সংগ্রাম রহিয়াছে, সে কিছু মহন্ধ সংগ্রাম নহে । আমাদের সমুদয় দল ল একত্র করিয়৷ এই সকল বিপক্ষতা অfতক্রম করতে হইবে । কিন্তু আমরা তাহার কি করিতেছি ? আমরা কি আমাদের সকল বল একত্র কারয়। সমবেত চেষ্টা দ্বার। বিপক্ষ দলকে পরাস্ত করতে প্রবৃত্ত হইতেছি ? আমাদের চতুর্দিকেই শত্র দল ; খৃষ্টানের বিপক্ষ , পৌত্তলিকেরা বিপক্ষ, নাস্তিকের বিপক্ষ ; এই বিপক্ষতা অতিক্রম করিবার জন্য আমরা কি করিতেছি ? ঐক্য, সৌহার্দ, প্রণয় ভাবই আমাদিগের অস্ত্র শস্ত্র । এক প্রীতি স্থত্রই ব্রাহ্মধৰ্ম্মের বন্ধন । ঈশ্বরে প্রীত্তি ; আপনাদের মধ্যে প্রীতি ; এই দুই ভাবই ব্রাহ্মধর্মের মুলাধার। গ্রীতি ছাড়িয়া কোন কাৰ্য্যও আমাদের নহে ; আ- . মাদের কার্য্যও ঈশ্বরের প্রিয়কাৰ্য্য। এক্ষণে ব্রাহ্মদিগের মধ্যে এই প্রণয়ভাবটি বিস্তার করা অতীব কর্তব্য । আমাদিগের মধ্যে পরস্পর দ্বেষভাব, ক্রোধভাব, বিচ্ছিন্নভাৰ না থাকে,সকলেরই ইহার প্রতি দৃষ্টি রাখা আবশ্যক । অন্যের দোষের প্রতি ক্ষমপনেত্র বিস্তার করা, তাহার উপরে অক্রোশ না করিয়া SS তাহার প্রতি প্রসন্ন ভাবে দৃষ্টি করা, অসৎকে সম্ভাৰ দ্বারা পরাজয় করা, এই অামাদের কার্য্য ! সকলেরই ইহার প্রতি লক্ষ্য রাখা উচিত, কিসে আমাদের মধ্যে একটা ঐক্য বন্ধন বন্ধ হয়,ভ্ৰাতৃ ভাব স্থাপিত হর । যে ঐক্য বন্ধন এই হতভাগ্য দেশে কোন উপায়ে কখন হয় নাই, এক্ষণে তাম্রারই সংস্থাপনের ভার ব্রাহ্মধৰ্ম্ম স্বহস্তে গ্রহণ করিয়াছেন । আমরা যেন এই মহৎ কা র্য্যের প্রতিবন্ধক ন কই । আমরা যেন এ বিষয়ে উদাসীন না থাকি । আমাদের সমুদয় বল একত্র করিয়া যেন ব্রাহ্মধৰ্ম্মের দিকে নিয়োগ করি। ব্রাহ্মধর্মের অনুগত হইলে এদেশে যাহা কথন হয় নাই, তাহাই হইবে: এখান হইতে ভ্ৰাতৃ সৌহার্দ ও পিতৃভক্তিঈশ্বরে প্রতি ও আপনাদের মধ্যে প্রণয় ভাব এ দুইই একত্রে উত্থিত হইয়। সকল স্থানকেই সিক্ত করিবে । * ত্যাগ স্বীকার করা, কষ্ট বহন করা, বি. পক্ষতা সহ্য করা এবং সকলে ঐক্য হইয় অপরাজিত চিত্তে ধৰ্ম্মকে রক্ষ করা ; সক. i ধৰ্ম্মের উন্নতিই এই প্রকারে হয় । ধৰ্ম্মধুদ্ধে সঙ্কচিত হইলে আমাদের দিয়া কঢ় । হবে না । অামাদের এই প্রকারে মি হইবে, যেন সমুদয় ব্রাহ্মই এক শরীর . ব্রাহ্মধৰ্ম্মই তাহার প্রাণ । ব্রাহ্মধৰ্ম্মকে জীবিতবান ধৰ্ম্ম করিতে হইবে, মৃতধৰ্ম্মের বল কোথায় ? সৌহার্দ বন্ধনই ব্রাহ্মধৰ্ম্মেয় বল। এক ক্রস্তে খড়গ, অন্য হস্তে শাস্ত্র ধারণ করিয়া এধৰ্ম্ম প্রচার করিতে শ্ল ষ্ট’বে না । প্রতি জন যেন এই মনে করেন, আমার উপরেই এ ধৰ্ম্মের সকল ভার পতিত হই, যাহার যত সাধ্য তিনি সেই প্রকারে সাহায্য করুন | এধৰ্ম্মের যিনি উপদেশ দেন, এ ধৰ্ম্ম যিনি শিক্ষণ করেন, এই উভয়ই ইহার সহযোগা। প্রতি ব্রাক্ষেরই এই মনে করিতে হইবে, আমার উপরেই ব্রাহ্মধৰ্ম্ম প্রচারের সমুদয় ভার । তিনি র্তাহার সহযোগী পাইলে ঈর্ষান্বিত হইবেন না, কিন্তু সৰ্ব্বতোভাবে আননিত হইবেন । তিনি যেখান হইতেই হউক, ব্রাক্ষ্মধৰ্ম্মের উন্নতি দেখিলেই সুখা হইবেন ।