পাতা:তারাচরিত.pdf/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৮
তারাচরিত।

 প্রভুরাওয়ের যত্নাতিশয়ে পৃথ্বীরাজ তাহার বাটীতে পাঁচ দিবস অবস্থিতি করিলেন। নানা আনন্দে তাঁহাদের দিন কাটিল। একদা তিনি বসিয়া নিসর্গ সন্দর্শন করিতেছিলেন, এমন সময়ে তাঁহার তারার সেই কাতরতা মনে পড়িল। তখন তিনি একেবারে প্রেম পারাবারে ঝম্পপ্রদান করিলেন। তাহার মন তার সেখানে থাকিতে চাহিতেছে না, তাহার চক্ষু নিয়ত তারার রূপ সন্দর্শনাভিলাষী হইতেছে। তাঁহার মন তারা বিষয়িণী চিন্তায় নিমগ্ন আছে এমন সময়ে তাহার ভগিনী আসিয়া উপস্থিত হইলেন। ভ্রাতাকে বিষণ্ন দেখিয়া তিনি কারণ জিজ্ঞাসু হইলে পৃথ্বীরাজ বলিলেন, ভগিনি আমি অদ্য এখান হইতে রওনা হইব, তাহাই ভাবিতেছি। এই বলিবামাত্র সেই চারুনয়ন দ্রুতপদে পতির নিকট যাইয়া বলিলেন যে, আমার ভ্রাতা অদ্য এখান হইতে যাইবেন তাহার সম্মানোচিত সামগ্রী সকল প্রস্তুত করিয়া দাও। শুনিয়া প্রভু রাও স্বীয় দুষ্টাভিসন্ধির উত্তম সুযোগ পাইলেন। তখন তিনি হৃষ্টান্তকরণে তথা হইতে গমন করিলেন। প্রভুরাও এমনি এক মাজুম প্রস্তুত করিতে জানিতেন যে রাজস্থানের আর কেহই তেমন জানিত না। তখন তিনি সেই মাজুমের সহিত এমনি তীব্রতর হলাহল মিশ্রিত করিলেন যে তাহা খাওয়া দূরে থাকুক আঘ্রাণ করিলে, আর কাহার প্রাণ রক্ষার উপায় নাই। হায় তিনি এমন কাজ যে কি ভাবিয়া করিলেন তাহা মনুষ্য চিন্তার অগোচর। রে ক্ষত্রিয়াধম তোমার মনে কি এই ছিল! -রে কাপুরুষ তুমি কেন সম্মুখীন হইয়া সংগ্রাম