বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:তারাচরিত.pdf/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তারাচরিত।
৪৯

করিলে না। তাহা হইলে ত মানুষের মনে এত ক্ষোভ থাকিত না। রে নরাধম এই কি তোমার ক্ষত্রিয়কুলোচিত কাজ হইল! এই কি তোমার বীরত্ব প্রকাশ হইল! হায় কেমন করিয়া তুমি এই অতি জঘন্য ঘৃণিত কাজ করিতে প্রবৃত্ত হইলে! তোমার শরীরে কি ভদ্রতা ও দয়ার লেশমাত্র ও নাই! তুমি কি পাষাণ হইতেও পাষাণ! তোমার অন্তর কি বিধাতা বজ্রে, গড়িয়াছিলেন! আহা তোমা হইতে যে ভারতবর্ষের কি অনিষ্ট সম্পাদন হইল তাহা তুমি কি বুঝিবে। যাহাদের ক্ষতি হইল তাহারাই জানিবে যে তুমি কি সর্ব্বনাশ করিলে!

 যৎকালে পৃথ্বীরাজ গৃহাভিমুখে যাত্রা করিলেন তখন সেই দুরাত্মা ক্ষত্রকুলাঙ্গার প্রভু রাও বিশেষ যত্ন ও আদর সহকারে তাঁহাকে স্বহস্ত প্রস্তুত সেই মাজুম দিলেন। উন্নতাত্মা মহোদয় পৃথ্বীরাজ সেই মায়াকারীর কালকূট আদরে গ্রহণ করিয়া প্রস্থান করিলেন।

 পথিমধ্যে যাইতে যাইতে তারা বিষয়িণী চিন্তা তাহার মনকে অধিকার করিল। পৃথ্বীরাজ মনে মনে কতই কি ভাবিতে লাগিলেন। একবার মনে করিলেন যে এখনি প্রিয়তমাকে দেখিয়া হৃদয় পরিতৃপ্ত করিব; তাহার কোমল করতলে আমার কঠিন করতল স্থাপন করিরা অপার আনন্দ সলিলে ভাসমান হইব; তাঁহার সেই অপাঙ্গ ভঙ্গি সন্দর্শন করিয়া স্বীয় নয়নের সার্থকতা করিব; হায় আসিবার সময় প্রিয়া যে কি ব্যাকুল হইয়াছিলেন তাহা মনে হইলে পাষাণ