পাতা:তারাচরিত.pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তারাচরিত।
৫১

অনন্ত দুঃখ সাগরে আপনার জীবন তরণী বিসর্জন দিলেন। এই সময়ে তাঁহার মনের ভাব যে কি হইল তাহা সেই ক্ষীরোদশায়ী ভগবান ভিন্ন প্রত্যক্ষ করিবার কাহারও ক্ষমতা নাই। হায় যিনি আশাকে সহায় করিয়া এতক্ষণ সুখ সলিলে সন্তরণ করিতেছিলেন, প্রিয়া সমাগম মনে করিয়া আহ্লাদে ভাসিতেছিলেন, কত রকম সুখই যাঁহার হৃদয় রাজ্যকে অধিকার করিয়াছিল, সেই ব্যক্তিই এখন আর আশাকে স্থান না দিয়া নৈরাশ্য সাগরে স্বীয় মহামূল্য জীবনকে নিক্ষেপ করিলেন।

 ক্রমে ক্রমে শরীর অবশ হইতেছে দেখিয়া পৃথ্বীরাজ তারার নিকট সংবাদ পাঠাইলেন। এই বলিয়া দিলেন যে, আসিয়া আমার সহিত সাক্ষাত কর, আমি ইহলোক হইতে বিদায় হইতেছি। অশ্বপৃষ্ঠে আরোহণ করিয়া দূত অতি দ্রুতবেগে গমন করিল এবং কুম্ভমেরুতে উপস্থিত হইল। অবিলম্বে অনুমতি লাভ করিয়া সে অবরোধে প্রবেশ করিল এবং কৃতাঞ্জলিপুটে তারার নিকট প্রভুর আদেশ জানাইল। তাহার মুখে সেই মর্মান্তিক সংবাদ শুনিবা মাত্র পতিপ্রাণ তারা একেবারে হত চেতন হইলেন এবং কি করিবেন তাহা ঠিক করিতে পারিলেন না। কিয়ৎক্ষণ পরে আলু লায়িতকেশে পাগলিনীর ন্যায় তিনি কমল মেরু হইতে যাত্রা করিলেন। এদিকে সেই মাজুমের অন্তর স্থিত কালসম কাল কূট পৃথ্বীরাজের শরীরকে অধিকতর অবশ করিয়া দেলিল। তার পৌঁছিবার পূৰ্বেই সেই অসীম সদগণ সম্পন্ন বীর্য্যশালী