পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৫৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একবিংশ অধ্যায়। বামা কাওরাণী অল্প দিন পরে পাড়ার লোক আর একটী বিষয় অবগত হইয়া, ঘোরতর বিস্মিত হইল। সকলে জানিতে পারিল যে, মাশ্চন্টক মহাশয়ের বাড়ী নিলাম হইয়া গিয়াছে। যাহা কিছু ভূমিসম্পত্তি তিনি ক্রয় করিয়াছিলেন, তাহাও সেই সঙ্গে গিয়াছে। মাশ্চন্টক মহাশয়কে সকলে ধনবান লোক বলিয়া জানিত। এরূপ দুর্ঘটনা। তবে কিরূপে হইল? ইহার কারণ ক্ৰমে ক্রমে সকলে অবগত হইল। শীঘ্ৰ আরও বড় মানুষ হইবার মানসে মাশ্চন্টক মহাশয় ও তাঁহার পুত্র কোম্পানির কাগজের ব্যবসা করিয়াছিলেন। প্রথম প্রথম বিলক্ষণ লাভ হইয়াছিল। এমন কি, প্ৰথম দুই মাসে তাঁহারা চল্লিশ হাজার টাকা লাভ করিয়াছিলেন। এমনি সুপড়তা পড়িয়ছিল যে, ধূলা-মুঠিা ধরিলে সোণা-মুঠা হইতেছিল। সেই সময় বোটের কাজ তিনি ছাড়িয়া দিয়াছিলেন ও বোট বেচিয়া ফেলিয়াছিলেন। কিন্তু ভগবতীর ব্যবসা পরিত্যাগ করেন নাই; কারণ, তাহাত লাভ অধিক ছিল। প্রভাবতীর মৃত্যুর পর ইহাদের লক্ষ্মী যেন ছাড়িয়া গেলেন। তখন হইতে কোম্পানির কাগজের ব্যবসাতে লোকসান হইতে লাগিল। সুপড়তার সময় একাজে যেমন লাভ, কুপড়তার সময় তেমনি ক্ষতি। এক এক বারে দশ হাজার—বারো হাজার টাকা লোকসান হইতে লাগিল। এখন সোণা-মুঠা ধরিলে ধূলা-মুঠা হইতে লাগিল। পূৰ্ব্বে যাহা কিছু লাভ করিয়াছিলেন, প্ৰথম সে সমুদয় গেল। তাহার পর ঘূর্বাঞ্ছ১ নগদ টাকা ও নিজের কোম্পানির কাগজ প্রভৃতি যাহা কিছু ছিল, সে সমুদয় নষ্ট র পর তিনি ঋণ করিয়া কিছু দিন ব্যবসা চালাইলেন; অবশেষে বাড়ী ঘর ভূমি সম্পত্তি বাধা দিয়া কাজ করিতে লাগিলেন । ক্ৰমাগতই লোকসান হইতে লাগিল; ঋণ বৃদ্ধি হইতে লাগিল। এইরূপে অল্প দিনের মধ্যে মাশ্চন্টক মহাশয়ের সর্বস্বান্ত ঋণের দায়ে এক্ষণে তাঁহার বাড়ী ঘর ও সমুদয় ভূমিসম্পত্তি বিক্রীত হইয়া গেল। তাঁর্হক্টর যে এত ঋণ হইয়াছিল, বাড়ী বঁধা পড়িয়াছিল, পাড়ার লোক তাহার কিছুই জানিত না। মাশ্চন্টক মহাশয়ের জ্ঞান-গোচর ছিল না। “ময়না কোথা গেল! টুকটুক!” এই কয়টী কথা ব্যতীত অন্য কথা তাহার এখন মুখ দিয়া বাহির হইত না। কোন রূপ কষ্ট হইলে কেবল ঐ কয়টীি কথা বলিয়া, তিনি উচ্চৈঃস্বরে রোদন করিতেন। তাঁহার স্ত্রীর হাতে যাহা কিছু টাকা ছিল, পিতা পুত্রে তাহা পূৰ্ব্বেই লইয়াছিল। সামান্য যাহা ছিল, তাহা দিয়া কিছু দিন তিনি সংসার চালাইলেন। কিন্তু সে টাকা অল্প দিনের মধ্যেই শেষ হইয়া গেল। তখন একজন প্রতিবেশীকে একখানি গহনা তিনি বিক্রয় করিতে দিলেন। কিন্তু এক্ষণে প্ৰকাশ হইল যে, মাশ্চন্টক মহাশয় আপনার স্ত্রীর সহিতও প্রবঞ্চনা করিয়াছিলেন। কোম্পানির কাগজের ব্যবসার শেষ অবস্থায় যখন তাহার টাকার নিতান্ত প্রয়োজন হইয়াছিল, তখন পিতা পুত্রে পরামর্শ করিয়া—“নূতন রং করিতে হইবে”—এই কথা বলিয়া তাঁহার সমুদয় গহনাগুলি লইয়াছিলেন। গহনাগুলি বিক্রয় করিয়া টাকা আপনাদের ব্যবসাতে ফেলিয়াছিলেন। সেই সমুদয় সোণার গহনার পরিবৰ্ত্তে কেমিক্যাল সোণার অর্থাৎ গিলটি করা পিত্তলের গহনা তাঁহাকে আনিয়া দিয়াছিলেন। পিতা পুত্রে, এক জন স্ত্রীর সহিত ও অন্য জন মাতার সহিত,- যে চাতুরী করিয়াছিলেন, এক্ষণে তাহা ধরা পড়িল। গহনা বেচিয়া যে কিছু কাল সংসার চালাইবেন, মাশ্চটক-গৃহিণীর সে ভরসাও তিরোহিত হইল। কি করিবেন! বাসন-কোসন বিক্রয় করিতে লাগিলেন । অল্প দিনের মধ্যে সে Wget spojęfj! sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro (*R9