পাতা:দর্পচূর্ণ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আজ ভগিনীপতি আসার পর হইতে যে-কেহ তাহার পানে চাহিয়াছে, তাহার মনে হইয়াছে, তাহাকে করুণা করিতেছে। কমলাকে কেহ তাহার পিতার কথা জিজ্ঞাসা করিলে ইন্দু মরমে মরিয়া যায়, বাড়ি ফিরিবার প্রশ্ন করিলে লিজায় মাটিতে মিশিতে চায় । অথচ আসিবার পূর্বে স্বামিকে সে অনেকগুলো মর্মান্তিক কথা বলিয়া আসিয়াছিল, প্ৰতিপালন করিবার ক্ষমতা হইলে যেন লইয়া আসে । হঠাৎ ইন্দুর মোহের ঘোর কাটিয়া গেল-কমলা, কঁদেছিস কেন মা ? কমলা রুদ্ধস্বরে বলিল, বাবার জন্যে মন কেমন কচ্চে । ইন্দুর বুকের উপর যেন হাতুড়ির ঘা পড়িল, সে মেয়েকে বুকে চাপিয়া ধরিয়া ফু পাইয়া কঁাদিয়া ফেলিল । বাহিরের প্রবল বারিবর্ষণ তাহার লজা রক্ষা করিল - কন্যা ছাড়া এ কান্না আর কেহ শুনিতে পাইল না । তাহার জননী শিখাইয়া দিলেন। কিনা জানি না, পরদিন সকাল হইতেই কমলা পিতার কাছে যাইবার জন্য বায়না ধরিয়া বসিল । প্ৰথমে ইন্দু অনেক তর্জন-গর্জন করিয়া, শেষে দাদাকে আসিয়া কহিল, কমলা কিছুতেই থামে না-কলকাতায় যেতে চায়। দাদা বলিলেন, থামাবার দরকার কি বোন, কাল সকালেই তাকে নিয়ে যা । কেমন আছে। নরেন ? সে আমাকে ত চিঠিপত্র লেখে না, তোকে লেখে ত ? ইন্দু দাড় হেঁট করিয়া বলিল, হু । छांक्षा आitछ ङ ? ইন্দু, তেমনি করিয়া জানাইল, আছেন । বিমলা অবাক হইয়া গেল-কখন এলে বৌ ? এই আসছি । ভূত্য গাড়ি হইতে ইন্দুর তোরঙ্গ নামাইয়া আনিল। বিমলা দারুণ বিরক্তি কোনমতে চাপিয়া কহিল, বাড়ি যাওনি ? 8 to