পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরের মধ্যে কৌতুকপণ দন্টিবিনিময় হল। বড় মেয়েটি বললেন-ওটা তানাখা, চন্দনকাঠের পাউডার, মাখে। মাখে। গম্ভীর ভাবে বললাম-ও ! মেয়েটি আমায় বললেন, তাঁরা ইংরজি কথা বলতে পারেন না। বাঙালী বাবরা ইংরিজি বিদ্যের জাহাজ, এমন একটি ইংরিজিতে সপন্ডিত ব্যক্তির সামনে তাঁরা তাঁদের বাজে ইংরিজির নমনা বার করতে পারবেন না, ভারি লতাজা করবে। ওঁদের বাবা বললেন-আপনি এখানে ক'দিন থাকবেন ? ] -- দিন পনেরো বোধহয় আছি। —দয়া করে রোজ সন্ধ্যেবেলা আমার এখানে আসন না কেন ? এখানে চা খাবেন আর আমার মেয়েদের সঙ্গে ইংরজিতে কথাবাত্তা কইবেন। ওদের শেখা হয়ে যাবে। আপনাকে দিয়ে আমার আড়তের চিঠিপত্রেও তা হলে লিখিয়ে নেবো। এক টাকা করে পাবেন এজনো-কি বলেন ? আমি আসতে রাজি হলাম। এক টাকাই দেবেন, আমার কোনো আপত্তি নেই। তবে দ-ঘণ্টার বেশি আমার পক্ষে থাকা সম্পভব হবে না, কারণ আমার নিজের আপিসের কাজ ও রাত্রে আমায় করতে হবে। একদিন খােব বলিষ্ট হল। আমি সমদ্রের ধারে বেড়াচ্চি, এমন সময় দেখি চট্টগ্রামবাসী সকবি ও সলেখক সরে"দ্রনাথ ধর সেখানে আপন মনে এক জায়গায় চপ করে বসে। সরেনবাব আমার বিশেষ বন্ধ এবার চট্টগ্রামে যে কদিন ছিলাম, কর্ণফলির ধারে একসঙ্গে মাঝে মাঝে দঙ্গনে বেড়াতুম। সরেন ধরে খামখেয়ালী ও ভবঘরে ধরনের লোক। বললেন- চলো হে আমার সঙ্গে, কাল বন বেড়াতে যাই।-- আমারও খােব উৎসাহ, বললাম-বেশ চলন, কোন দিকে যাবেন ? --আরাকান ইয়োমা রেঞ্জ, যেটা এখান থেকে দেখা যাচ্চে, ওইদিকে নিবিড় টিকউড ফরেসট। চলো। ওদিকে যাবো— সরেনবাবরে জীবনে পায়ে হোটে এরকম বেড়ানো অভ্যোস অনেকদিন থেকেই আছে জানি, তাঁর কথায় তখনি সম্পমতি দিলাম-বললাম—এখানে কবে এলেন ? --- এখানে আমাৰ এক বন্ধ আছেন ডাক্তার, তাঁর ওখানে বেড়াতে এসেছিলাম, প্রায় দশ দিন আছি। শরীরটা ভালো ছিল না, এখন একটি সেরেচে। যদি বেরতে হয়, এইবার-—এই হস্তার মধ্যেই। আমি সন্ধ্যেবেলা বাল্মী" ভদ্রলোকের বাড়ি গিয়ে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলতে তিনি আমায় অনেক ভয় দেখালেন। আরাকান ইয়োমা পন্বতশ্রেণী বন্যজন্তু-সঙ্কুল, দক্ষিপ্ৰবেশ্য ও প্রায় জনহীন। তা ছাড়া সামনে যে পৰ্ব্ববত দেখা যায়, ওটা আসল রেঞ্জ নয়, ওর ত্রিশ-বত্ৰিশ মাইল পেছনে যে ধোঁয়ার মতো পাহাড়শ্রেণী দেখা যাচ্চে, ওখানে তাঁদের ফরেস্ট ইজারা করা আছে, কায্যোপলক্ষে অনেকবার তিনি সেখানে গিয়েচেন, অত্যন্ত দাগম জায়গা। দজন মাত্র লোকের পক্ষে সেখানে যাওয়া নিতান্ত দঃসাহসের কাজ ছাড়া আর কিছ নয়। ভদ্রলেকের নাম মৌংপে। কাঠের ব্যবসা করে দােপয়সা করেচেন, তা তাঁর বাড়ির আসবাবপত্র দেখেই বোঝা যায়। छ्व्न মৌংপে বললেন-আমার এই বড় মেয়েটি আমার সঙ্গে একবার সেখানে গিয়েআমি বিস্ময়ের সরে বললাম-গাড়ি যায় নাকি সেখানে ? কিসে গেলেন ? -হাতীর পিঠে। কাঠ বয়ে আনবার জন্যে আমাদের হাতী আছে জগুগলে, আমার KON