fe con থাপাকে বিদায় দেওয়া হ’ল। সে আমাদের মানুষ করেছিল, বিশেষ ক'ৱে সীতাকে । , তাকে এক মাসের বেশী মাইনে, দুখান কাপড় আর বাবার একটা পুরোনো কোট দেওয়া ? হ’ল। থাপা বেশ সহজ ভাবেই বিদায় নিলে, কিন্তু বিকালে আবার ফিরে এসে বললে সে । আমাদের যাওয়ার দিন শিলিগুড়ি পৰ্য্যন্ত নামিয়ে দিয়ে তবে নিজের গায়ে ফিরে যাবে। শিলিগুড়ি স্টেশনে সে আমাদের সবাইকে সন্দেশ কিনে খাওয়ালে-ওর মাইনের টাকা থেকেই বোধ হয়। মা রাধলেন, সে সব যোগাড় ক’রে দিলে । ট্রেন যখন ছাড়ল তখনও থাপা ধ্যাটফৰ্ম্মে দাড়িয়ে বোকার মত হাসছে। কাঞ্চনজঙ্ঘাকে ভালবাসি, সে যে আমাদের ছেলেবেলা থেকে সার্থী, এই বিরাট পৰ্ব্বতপ্রাচীর, ওক-পাইনের বন, আৰ্কিড, শেওলা, ঝর্ণা, পাহাড়ী নদী ; মেঘ-রোদ-কুয়াশার খেল- , এরই মধ্যে আমরা জন্মেছি—এদের সঙ্গে আমাদের বত্ৰিশ নাড়ীর যোগ। “তখন এপ্রিল মাস, , আবার পাহাড়ের ঢালুতে রাঙা রডোডেণ্ডন ফুলের বন্যা এসেছে-সারা পথ দাদা বলতে বলতে এলচুপিচুপি-কেন বাবা অতি মদ খেতেন, তা না হ’লে তাে আর চাকরি যেত না-বাবারই ', v CFR ܠܹܐ (ܝ . আমাদের দেশের গ্রামে পৌঁছলাম। পরদিন বেলা ন’টার সময়ে। বাবার মুখে শুনেছিলাম গ্রামের নাম আটঘরা, স্টেশন থেকে মাইল দুই আড়াই দূরে, জেলা চব্বিশ-পরগণা। এত বাঙালী পরিবারের বাস একসঙ্গে দেখে মনে বড় আনন্দ হ’ল । আমরা কখনো ফসলের ক্ষেত দেখিনি, বাবা চিনিয়ে দিলেন পাটের ক্ষেত কোনটা, ধানের ক্ষেত কোনটা । এ ধরণের 1মতলভূমি আমরা দেখিনি কখনো-রেলে আসবার সময় মনের অভ্যাসে কেবলই ভাবছিলাম এই বড় মাঠটা ছাড়ালেই বুঝি পাহাড় আরম্ভ হবে। সেটা পার হয়ে গেলে মনে হচ্ছিল এইবার নিশ্চয়ই পাহাড়। কিন্তু পাহাড় তো কোথাও নেই, জমি উচুনীচুও নয়, কি অদ্ভুত সমতল! তদূর এলাম শিলিগুড়ি থেকে সবটা সমতল-ডাইনে, বাঁয়ে, সামনে, সবদিকে সমতল, এ এক আশ্চৰ্য্য ব্যাপার। দাদা এর আগে সমতল ভূমি দেখেছে, কারণ সে জন্মেছিল হনুমান নগৱে, নতুন অভিজ্ঞতা হ’ল আমার ও সীতার। আমাদের বাড়িটা বেশ বড়, দোতলা, কিছু পুরনো ধরনের। বাড়ির পেছনে বাগান, ছোট একটা পুকুর। আমরা যখন গাড়ি থেকে নামালাম-বাড়ির মেয়েরা কেউ কেউ দোরের কাছে ড়িয়েছিলেন, তার মধ্যে জ্যাঠাইলা, কাকীমারাও ছিলেন। মা বললেন, প্ৰণাম করো। 6