পাতা:দৃষ্টিপ্রদীপ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কেউই কঁদছে না। আমারও কান্না পেল না-বরং একটা ভয় এল-একা মড়ার কাছে কেমন ক’রে কতক্ষণ বসে থাকব না জানি ! অনেকক্ষণ পরে শুনতে পেলুম আমাদের পাড়ার কেউ মৃতদেহ নিয়ে যেতে রাজী নয়, বাবা কি রোগে মারা গেছেন। কেউ জানে না, তঁার প্রায়শ্চিত্ত করানো হয় নি মৃত্যুর পূর্বে -এ অবস্থায় কেউ সৎকার করতে রাজী নয়। প্ৰায়শ্চিত্ত এখন না করালে কেউ ও মড়া gईद मां । প্ৰায়শ্চিত্ত করাতে পাঁচ-ছ টাকা নাকি খরচ। আমাদের হাতে অত তো নেই-মা বললেন । কে যেন বললোঁ-তা এ অবস্থায় হাতে না থাকলে লোকের কাছে চেয়ে-চিন্তে আনতে হয়, কি আর করবে ? দাদাকে মা ও-পাড়ার কার কাছে পাঠালেন টাকার জন্যে। খানিকটা পরে ও-পাড়া থেকে জনকতক ষণ্ডামত লোক এল-শুনলাম তারা গালাগালি দিতে দিতে বাড়িতে ঢুকছে -এমন ছোটলোকের পাড়াও তো কখনো দেখি নি ? কোথায় পাবে এরা যে প্ৰচিত্তির করাবে ? প্ৰচিত্তির না হ’লে মড়া কি সারা দিনরাত ঘরেই পড়ে থাকবে ? যত ছোটলোক সাব-কোনো ভয় নেই, দেখি মড়া বার হয়। কিনা । আমি উত্তেজনার মাথায় মড়া ছুয়ে বসে থাকার কথা ভুলে গিয়ে তাড়াতাড়ি দোরের কাছে এসে দাড়ালাম। এদের মধ্যে আমি একজনকে কেবল চিনি। মাঠবাড়ির ফুটবল caलांझ भशन ct2ांछेिवांभ । ওরা নিজেরাই কোথা থেকে বঁাশ কেটে নিয়ে এল-পাট নিয়ে এসে দাঁড়ি পাকালে, তারপর বাবাকে বার ক’রে নিয়ে গেল—দাদা গেল সঙ্গে সঙ্গে শ্মশানে। একটু পরে সন্ধ্যা হ’ল। সেজ খুড়ীমা এসে বললেন-মুড়ি খাবি জিতু ? আমি ও সীতা মুড়ি খেয়ে শু’ে ঘুমিয়ে পড়লাম। তিন বছর আগেকার কথা এসব । তার পর থেকে এ বাড়িতেই আছি । জ্যাঠামশাইরা প্ৰথমে রাজী হন নি, দাদা ষষ্ঠীতলায় বটগাছের নীচে মুদিখানার দোকান করেছিল---সামান্য পুজি, আড়াই সেরা চিনি, পাঁচ সের ডাল, পাঁচ সের আটা, পাচ পোয় ঝাল-মশলা—এই নিয়ে দোকান কতদিন চলে ? দাদা ছেলেমানুষ, তা ছাড়া ঘোরাপেঁচ কিছু বোঝে না, একদিক থেকে সব ধারে বিক্ৰী করেচে, যে ধারে নিয়েচে সে আর ফিরে দোকানের পথ মাড়ায় নি । দোকান উঠে যাওয়ার পরে দাদা চাকরির চেষ্টায় বেরুলো, সে তার ছোট মাথায় আমাদের সংসারের সমস্ত ভাবনা-ভার তুলে নিয়ে বাবার প্রতিনিধি রূপে আমাদের খাওয়া-পরানোর দুশ্চিন্তায় রাতে ঘুঘুতো না, সারা দিন চাকরি খুঁজে বেড়াত। নাস্তির কারখানায় একটা সাত SS