পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

কয় মাস যে নবাব সুজাবেগ যে তাহাকে কত মিষ্ট কথায়, কত মধুর প্রেম সম্বোধনে ভুলাইয়া রাখিয়াছিলেন! সে সবই কি কপটতাময়? সত্যই কি তিনি এই স্বৈরিণীর ক্রীতদাস?

 তার পর সে মনে মনে ভাবিল—“এই শয়তানী বাহারবানু যে তাহার বিবাহের পূর্ব্ব হইতেই তাহার সর্ব্বনাশের চেষ্টা করিয়া আসিতেছে। হায়! কেন সে তাহার স্বামীর নিকট বাহারবানুর সহিত পীরমহরমে সাক্ষাৎ সম্বন্ধে, সমস্ত কথা গোপন করিয়া রাখিয়াছিল।”

 এই বাহারবানু যে নিশ্চয়ই কোন একটা সাংঘাতিক গোপনীয় ব্যাপারের জন্য—তাহার স্বামীর উপর এতটা আধিপত্য প্রকাশ করিতেছে, তাহা সে তাহাদের গুপ্ত কথোপকথনের শেষাংশ হইতেই বুঝিতে পারিয়াছিল। ভিতরের ব্যাপারটী যে কি, তাহা জানিবার জন্য তাহার বড়ই একটা কৌতুহল জাগিয়া উঠিল। আর এ কথাও সে ভাবিল, যে তাহার এই কৌতুহল নিবৃত্তির একমাত্র উপায়, তাহার স্বামী নবাব সুজাবেগ। কিন্তু তিনি কি তাহাকে সকল কথা সরলভাবে খুলিয়া বলিবেন?

 এই ভাবে নানাদিক দিয়া অনেক রকমের সমস্যা, তাহার ক্ষুদ্র হৃদয় খানিকে বড়ই ব্যতিব্যস্ত করিয়া তুলিল। সকল দিক দিয়া সে এই সমস্যাময় ব্যাপারের সমাধানের জন্য একটা চেষ্টা করিতে লাগিল— কিন্তু পারিল না।

 এই ভীষণ বিপদের সময় মীর লতিফের কথা সহসা তাহার মনে জাগিয়া উঠিল। সে মনে মনে ভাবিল—“হায়! মীর

১২২