পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

উন্নিসা—এই মৌনকে সম্মতি চিহ্ন মনে করিয়া তাহার গাত্র হইতে অলঙ্কারগুলি খুলিতে লাগিল।

 বাহারবানু আনারের মনের ভাব বুঝিতে পারিয়া মনে মনে একটু হাসিয়া বলিল,—“কি তুমি সামান্য এক লক্ষ টাকার প্রলোভন আমায় দেখাইতেছ—আনার বেগম! বাহারবানুকে পুরুষে যখন এ পর্য্যন্ত চিনিতে পারে নাই—তা তুমি অতি দূরে! জাননা তুমি—যে নবাব সুজাখাঁর মৃত্যুবাণ আমার হাতে। তাঁহার মরণ বাঁচন আমার হাতে। তোমার ধৃষ্টতা একবার সহ্য করিয়াছি, এবারও করিলাম। সুজাখাঁ আমার এই মুষ্টি মধ্যে থাকিলে, কত ‘এক লক্ষ টাকা’ আমার ঘরের মেঝেয় গড়াগড়ি যাইবে।”

 এই সময় মধ্যে আনারের অলঙ্কার খোলার ব্যাপারটা শেষ হইয়া গিয়াছিল। তাহার সম্মুখস্থ একটী হস্তীদত্ত নির্ম্মিত কারুকার্য্যময় ক্ষুদ্র হাতবাক্সে, সেই অলঙ্কারগুলি রাখিয়া তাহার ডালা বন্ধ করিয়া সে বাহারবানুকে বলিল “বাহারবানু! আনন্দে আমি এগুলি তোমায় দিতেছি। কিন্তু প্রতিজ্ঞা কর—

 বাহারবানু। কি প্রতিজ্ঞা করিব?

 আনারউন্নিসা। আজ হইতে তিন দিনের মধ্যে তুমি আগরা ত্যাগ করিয়া দাক্ষিণাত্যে চলিয়া যাইবে।

 এই কথার সঙ্গে সঙ্গে আনারউন্নিসা একটী রেশমী থলিয়া বাহারের সম্মুখে রাখিয়া বলিল— “ইহাতে এক সহস্র মুদ্রার আসরফি আছে। ইহা তোমার পাথেয়।”

১৫৪