কক্ষেই বসিয়াছিলেন। সুতরাং তখনই ব্যস্তভাবে সেই পত্রখানি লুকাইয়া ফেলিলেন।
আনার কক্ষমধ্যে প্রবেশ করিয়া ধীরে ধীরে স্বামীর পার্শ্বে বসিয়া স্মিতমুখে বলিল,— “আজ কেমন আছ তুমি নবাব?”
নবাব সুজ খাঁ, মলিন হাস্যের সহিত আনারের মুখের দিকে চাহিয়া বলিলেন,—“তুমি ভাল থাকিলে, তোমার হাসিমুখ দেখিলেই আমার যে অপার আনন্দ আনারউন্নিসা!”
আনার। হইতে পারে! কিন্তু তবুও বুঝিতেছি, আজ তোমার তরিয়ৎ বা মন কিছুই যেন ভাল নয়?
সুজা। কেমন করিয়া জানিলে?
আনার। কাল সারারাত তুমি ভাল করিয়া নিদ্রা যাও নাই। তোমার নিদ্রা না আসা পর্য্যন্ত, আমি দীর্ঘক্ষণ জাগিয়া থাকিয়া তোমাকে ব্যজন করিয়াছি। আর এই পবিত্র স্নিগ্ধ প্রভাতে, তোমার হাস্য বিহীন বিরস মলিন মুখ আমার স্পষ্টই বুঝাইয়া দিতেছে। যেন কি একটা দারুণ দুশ্চিন্তা—”
সুজাবেগ একটী মর্ম্মভেদী দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলিয়া বলিলেন, “আনার! আমার সর্ব্বনাশ হইয়াছে।”
আনার। সে কি? কি বলিতেছ তুমি?
সুজাবেগ। আমার পাঁচলক্ষ টাকার জহরত এক মহাজনের গদীতে গচ্ছিত ছিল। তাহাই আনিতে আজমীরে গিয়াছিলাম। শুনিলাম, যে দুই মাস পূর্ব্বে তাহা চোরে লইয়া গিয়াছে। যার কাছে জমা ছিল, সে লোকটা ভয়ে নিরাশায় আত্মহত্যা