পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

করিয়াছে। জহরত গুলির কোন পাত্তাই নাই। গদী ও উঠিয়া গিয়াছে। আমার বর্ত্তমান বড়ই অন্ধকারময়।

 আনার। গেলই বা পাঁচলক্ষ টাকা। তুমি বাঁচিয়া থাকিলে টাকার অভাব কি?

 সুজাবেগ। যে কথা তোমায় সেদিন বলি নাই, তাহা আজ বলিব। আমি বড়ই বিপন্ন। শাহজাদা দারাকে আমি ছয় লক্ষ টাকা দিতে প্রতিশ্রুত আছি। দিতে না পারিলে আমার জীবন পর্য্যন্ত বিপন্ন!

 আনার। ব্যাপার কি?

 “সবই বলিতেছি। জীবন মৃত্যুর সন্ধিস্থলে থাকিয়া এখন আর গোপন করিলে চলিবে না।” এই কথা গুলি বলিয়া নবাব সুজাবেগ কক্ষের বাহিরে গিয়া একবার চারিদিকে দেখিয়া আসিলেন। দেখিলেন, কোন বান্দা বাঁদিই সেখানে নাই। তখন ধীরে ধীরে কক্ষের দরজাটী বন্ধ করিয়া দিয়া, সেই গুপ্ত কক্ষের মন্ত্রণা ব্যাপার সম্বন্ধে সকল কথাই আনারকে প্রকাশ করিয়া বলিলেন।

 নবাবের কথা শুনিয়া আনার ভয়ে শিহরিয়া উঠিল। তাহার সর্ব্ব শরীর কাঁপিতে লাগিল। সেই ভয় চকিত ভাবটা সামলাইয়া লইয়া আনার মনে মনে ভাবিল, — “এ সংকট সময়ে সাহস হারাইলে চলিবে না। পত্নীর গভীর কর্ত্তব্য পালনের যদি কোন উপযুক্ত অবসর আমার ঘটিয়া থাকে—তাহা এই।”

 এইরূপ ভাবিয়া আনার অপেক্ষাকৃত প্রসন্নমুখে স্বামীকে বলিল, “তুমিই আমার রত্মালঙ্কার, তুমি আমার সর্ব্বস্ব। তুমি বজায় থাকিলে আমার কিসের ভাবনা। সুখে দিন কাটিতেছিল, না হয়

১৭০