পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

আবার লুকাইয়া রাখিয়া, মনে মনে এই আগন্তুক বিপদ হইতে প্রতিকারের উপায় চিন্তা করিতে লাগিলেন। দীর্ঘ চিন্তার পর নিবিড় অন্ধকারের মধ্যে যেন একটা অতি সূক্ষ্ম আলোকরেখা দেখিয়া, দত্তে দন্তে নিষ্পেষিত করিয়া তিনি অস্ফুট স্বরে বলিলেন, “শয়তানি! পিশাচি! যদি একদিন তোর হৃদয়ের শোণিত আকর্ষণ করিতে পারি— তাহা হইলে বুঝিব, তোর এ ধৃষ্টতার উপযুক্ত শাস্তি দিয়াছি।”

 সন্ধ্যার পর আনারউন্নিসার সেই বহুমূল্য রত্নহারের ক্ষুদ্র পেটিকাটি বস্ত্র মধ্যে লুকাইয়া লইয়া, নবাব গৃহের বাহির হইতে যাইতেছেন—এমন সময়ে আনারউন্নিস। তাঁহার সম্মুখে আসিয়া সহাস্যমুখে বলিল—“এত ব্যস্ত ভাবে কোথায় যাইতেছ তুমি প্রিয়তম!”

 সুজাখাঁ আনারের মুখ চুম্বন করিয়া বলিলেন—“কোন একটা লোকের সহিত শাহজাদার আর্থিক ব্যাপার সম্বন্ধে পরামর্শ করিবার জন্য, ঘণ্টা কয়েকের মত আমাকে আরামবাগে একবার যাইতে হইবে। মধ্য রাত্রের পূর্ব্বেই আমি ফিরিয়া আসিব। কোন চিন্তা নাই তোমার আনার।”

 সুজাখাঁর সঙ্কল্পিত কাজে সহসা একটা বাধা স্বরূপ আসিয়া পড়ায়, আনার যেন একটু অপ্রতিভ হইয়া পড়িল। সে কম্পিত স্বরে বলিল—“খোদা তোমার কার্য সিদ্ধি করুন! বেশী রাত্রি করিও না। আমি তোমার আশাপথ চাহিয়া রহিলাম।”

 সুজাখাঁ পত্নীর নিকট বিদায় হইয়া, যানারোহণে আরাম-

১৭৪