পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

পৌঁছিতাম। তাই নিরাশার মনস্তাপে, বাহারবানুকে হত্যা করিয়া, নবাব সুজাখাঁর মৃত্যুর প্রতিশোধ লইয়াছি!”

 মীরলতিফ আনারের দিকে উন্মাদের মত বিকট দৃষ্টিক্ষেপ করিয়া, সেই ছুরিকাখানি কক্ষ মধ্যে সজোরে নিক্ষেপ করিল। আর সেই রত্নহার আনারের দিকে ছুঁড়িয়া ফেলিয়া দিয়া, দ্রুতপদে সেই কক্ষ হইতে বাহির লইয়া গেল। নবাবের মৃত্যুর সহিত সকল ঘটনার শেষ যবনিকা পড়িল।

 * * * *

 পারিবারিক মসৌলিয়ামে বা সমাধিক্ষেত্রে— নবাব সুজা বেগের বিনা আড়ম্বরে সমাধি হইয়া গিয়াছে। তাহার পর দুই মাস কাটিয়াছে। শোকের দিনই হৌক, আর সুখের দিনই হৌক, সমান ভাবেই সেগুলি চলিয়া যায়।

 সুলতান দারা, নবাব সুজা বেগের মৃত্যু সংবাদে বড়ই ব্যথিত চিত্ত হইলেন। তাঁহার অকাল মৃত্যুতে তিনি একজন অনুরাগী সুহৃৎ হারাইলেন। বাহারবানুর দ্বারাই যে এ হত্যা কাণ্ড ঘটিয়াছিল—সহরে তাহা প্রকাশ হইয়া পড়িল। সুলতান বাহারবানুকে ধরিবার জন্য, অনেক চেষ্টা করিলেন। পরিশেষে তাহার নিজের গৃহ হইতেই তাহার গলিত মৃতদেহ বাহির হইল। সকলে বুঝিল, বাহার রাজদণ্ডের ভয়ে, লাঞ্ছনার ভয়ে, আত্মহত্যা করিয়াছে।

 এই এক মাসে আনারউন্নিসারও সম্পূর্ণ পরিবর্ত্তন হইয়াছে। সুখ, বিলাস, স্বচ্ছন্দ সবই সে ত্যাগ করিয়াছে। তাঁহার মুখের সে কান্তিলাবণ্য নাই—দেহে যত্ন নাই —বেশে আনুরক্তি নাই—

১৯০