পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

ভোগ করিতেছিল, একদিন এই রূপসী বাহারবানুর কক্ষ মধ্যেই, প্রভাতসূচনার সঙ্গে, সেই আমীরের মৃতদেহ পাওয়া গেল। অবশ্য এই ব্যাপার ঘটায়, আগরা সহরে দিন কয়েকের জন্য একটা হুলস্থুল পড়িয়া যায়। কেননা এই ওমরাহ,খুব একজন নামজাদা ধনী ছিলেন। বাহারবানুর শত্রুপক্ষ, এই হত্যা ব্যাপারে বাহারবানুকে জড়াইবার জন্য অনেক চেষ্টা করিয়াছিল। কিন্তু শত্রু অপেক্ষা তাহার অনুগ্রহ-প্রার্থী মিত্র সংখ্যাই খুব বেশী। আর এই মিত্রগণ আবার গণনীয় ওমরাহ শ্রেণীর লোক। সুতরাং এই হত্যা-কাণ্ডের জন্য, বাহারবানুকে কোনরূপ জখমে পড়িতে হইল না বটে, তবে এই শোচনীয় ব্যাপারের পর হইতে, তাহার সৌভাগ্যের প্রবল স্রোতে যেন একটা ভাঁটা পড়িতে আরম্ভ হইল। তাহার পসার প্রতিপত্তি কমিয়া আসিল।

 এই দুনিয়ায় যেমন কোন জিনিষই চিরদিন থাকে না, কালক্ষয়ের সহিত বাহারবানুর নামে এই হত্যার কলঙ্কটাও ক্রমশঃ সেইরূপ লোকের স্মৃতি হইতে বিলুপ্ত হইয়া গেল। মাস কয়েকের জন্য সহর ত্যাগ করিয়া, সে আগরার প্রান্তসীমায় এক ক্ষুদ্র উদ্যান বাটীতে প্রচ্ছন্নভাবে বাস করিতে লাগিল।

 কোন এক ওমরাহের গৃহে এক সঙ্গীতের মজলেসে, নবীন নবাব সুজাবেগ, এই বাহারবানুর রূপ দেখিয়া, গান শুনিয়া, বড়ই মোহিত হইয়া পড়েন। ক্রমশঃ যাতায়াতে আর মেশামেশিতে উভয়ের মধ্যে একটা বেশীগোছের অন্তরঙ্গ ভাব জন্মিয়া যায়। এই

৪৩