পাতা:দেশবন্ধু রচনাসমগ্র.pdf/৩৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ইঃ দেশবন্ধ রচনাসমগ্র অনেকে বসিয়াছেন যে, আমাদের পক্ষে জাতিত্বের গেীরব করা নিতান্ত অসদত। কারণ, এই যে জাতিত্বের ভাবইহার সমস্তই আাগাগোড়া বিলাতের আমদানি —একটা ধার করা সামগ্রী মাত্র। এটা যে তাদের ভূল, তাহা আমি বুঝাইতে চেষ্টা করিব। আামি আগেই বলিয়াছি, কোন একটা বিশিষ্ট দেশের সঙ্গে সেই দেশবাসীদের যে নিত্যসম্বন্ধ, তাহারই উপরে জাতিত্বের প্রতিষ্ঠা হইতে পারে, এ সম্বন্ধ যাহা নিত্য আবহমান কাল হইতে আছে ও চিরদিনই থাকিবে, তাহার প্রতি এতকাল এমতভাবে আমাদের চোখ পড়ে নাই; হইতে পারে, আমাদের সভ্যতায় ও সাধনায় এই সম্বন্ধে কোন বিশিষ্ট নাম রাখা হয় নাই; ইহাও হইতে পারে, ইউরোপের সভ্যতা ও সাধনা, তাহাদের শিক্ষা-দীক্ষা, বিজ্ঞান, ইতিহাস লইয়া এমন করিয়া হুড়মুড় করিয়া আমাদের ঘাড়ের উপর না। পড়িলে, হয় ত এত সহজে এত শীজ আমাদের জাতিত্বের চৈতন্য হইত না তাহ৷ বলিয়ন কি যাহা আমাদের, অামাদেরই দেশের, যাহা বাজলার মাটি বাদলার জলের সঙ্গে অণুতে অণুতে প্ৰাণে প্ৰাণে জড়াইয়া আছেতাহাকে বিলাতের আমদানি বলিয়া সমস্ত বাঙ্গালীজাতিকে অপমান করিব? যাহ৷ চিরকাল আছেতাহাকে দেখিতে পাই নাই, বুঝিতে পারি নাই বলিয়া কি ধরিয়া লইতে হইবে যে, তাহার কোন অস্তিত্ব ছিল না? বিজ্ঞান জগতে যে বড় বড় সত্য আবিষ্কার হইয়াছে, সে সব সত্যই যে সনাতন—তাহাদের সত্ত৷ বা অস্তিত্ব ত কোন বিজ্ঞান বা বিজ্ঞানবিদের উপরে নির্ভর করে না? যাধ্যাকর্ষণ যেমন নিউটনের জন্মাই বার অাগেও ছিল, জামাদের জাতির জাতিত্ব তেমনি ইংরাজ আাসিবার আগেও ছিল। আঘরা দেখিতে পাই নাই বলিয়া যে ছিল না তাত। নহে। ইউরোপ হইতে একটা বিপরীত সাল্যতা আাসিয়া অামাদের জীবনে আঘাত করিল, সে আঘাতে আমাদের চৈতন্য হইল, সেই মুহুর্তেই আমাদের জাতির যে জাতিত্ব, তাহার সাক্ষাৎ পাইলাম। এমন কম্ৰিহ্মাই মহত্যজীবনে আত্মজ্ঞানের প্রতিষ্ঠ। হয়, বাহিরের রূপ ইন্দ্রিয়ের ভিতর দিয়া আত্মাকে আঘাত করে, সেই আঘাতেরই ফলে আমরা আপনাকে দেখিতে পাই, কিন্তু যাহা দেখি তাহ ত বাহিরের নয়, তাহা আমাদের প্রাণের বস্থা। অামাদের নবজাগ্রত বাঙ্গালী জাতির হে জাতিত্ব, তাহ৷ আমাদের প্রাণবন্ত, বিদেশের নহে। স্বদেশী আান্দোলনের সময় ভগবৎকুপায় অামাদেরই প্রাণের মধ্যে তাগার সাক্ষাৎ পাইয়াছি—তাহাকে ধার করিয়া সাত সমুদ্র তের নদী পার করিয়া লইয়া হাসি নাই। এই কথার সঙ্গে সঙ্গে অার একটা কথার বিচার ও আলোচনার অাবঠক।