পাতা:ধর্ম্মজীবন (দ্বিতীয় খন্ড) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8 ধৰ্ম্মজীবন। ইন্টক-নিৰ্ম্মিত ভবন ভিন্ন আর ইন্টক-নিৰ্ম্মিত ভবন দেখেন নাই ; সুতরাং সহরের স্বীয় বাস ভবনটী দেখিয়া তিনি মনে করিলেন, সেই ভবনটী সহরের একটি প্রধান ভবন ও সেই পাড়াটী সহরের একটী প্ৰধান স্থান। তিনি যে ভবনটীতে বাস করিতেছেন তাহা হইতে বাহিরের কিছু দেখিবার যে নাই, সুতরাং তঁহার এই ভ্ৰান্তি ও ঘূচিবার উপায় নাই । এইরূপ কিছু দিন যায়, এক দিন তাহার পতি বলিলেন,-“চল তোমাকে সহর দেখাইয়া আনি ৷” এই বলিয়া তাহাকে সমস্ত দিন ঘুরিয়া সহর দেখাইয়া আনিলেন। বন্ধুটী সহর দেখিয়। সায়ংকালে গৃহে আসিয়া বলিলেন,-“মাগো সহর এত বড় ! ওমা সহরের কি ও চা জায়গাতে আছি, এ কি ছোট বাড়ীতেই আছি !” জিজ্ঞাসা করি, এই রমণীর পূর্বভাব ও বর্তমানভাবে প্ৰভেদ কি হইল ? তিনি পূৰ্ব্বে যে গৃহে বাস করিতেছিলেন এখন ও সেই গৃহে বাস করিতে লাগিলেন, পূর্বে যে গুহকৰ্ম্ম সকল সম্পাদনা করিতেছিলেন এখন ও তাঁহাই করিতে লাগিলেন, তবে প্ৰভেদ কোথায় রহিল ? প্ৰভেদ রহিল জ্ঞানে ; পূর্বে জানিতেন। তঁহাদের ভবনটা সহরের মধ্যে একটা প্ৰধান ভবন, এখন জানিলেন, তাহা অতি ক্ষুদ ; পূর্বে স্বীয় ভবনটাকে মহৎ জানিয়া হৃদয়ে একটু অহঙ্কার ছিল, এখন তাহাকে ক্ষুদ্র জানিয়া হৃদয়ে একটু বিনয় আসিল ;-এইমাত্ৰ প্ৰভেদ। গীতোক্ত অজ্ঞ ও জ্ঞানীর মধ্যে কৰ্ম্ম সম্বন্ধেও এইরূপ প্ৰভেদ। উভয়ে একই কৰ্ম্মের মধ্যে বাস করিতে পারেন, অথচ উভয়ের ভাব বিভিন্ন ।