পাতা:ধর্ম্মজীবন (প্রথম খণ্ড) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

W Ub ধৰ্ম্মজীবন । জাতির ইতিবৃত্ত পাঠ করিলেই দেখিতে পাওয়া যায় যে, ইহঁাদিগকে বার বার বন্দী-দশাতে বিদেশীয়দিগের মধ্যে বাস করিতে হইয়াছে। বিদেশে, বিধৰ্ম্মী ও বিভিন্নভাষী লোকদিগের মধ্যে বাস করাতে ইহঁদের স্বজাতি-প্রেম ও স্বধৰ্ম্মানুরাগ বৃদ্ধি প্ৰাপ্ত হইয়াছে এবং আপনাদের যাহা কিছু আছে, তাহার সংরক্ষণের প্রবৃত্তি আতিশয় বলবতী হইয়াছে ; সুতরাং ইহঁদের জাতীয় দেবতা জাভের উপাসনার সঙ্গে সঙ্গেই জাতীয় স্বাধীনতা ও উন্নতি লাভের বাসনা মিশ্রিত হইয়া গিয়াছে। অথবা এই জাতীয় আকাঙক্ষার অপর কোনও কারণ থাকিতে পারে। কারণ যাহাই হউক, য়িহুদী ধৰ্ম্মের প্রকৃতিই যে সামাজিক-ভাবাপন্ন তাঁহাতে আর সন্দেহ নাই। খ্ৰীষ্টধৰ্ম্ম ও মহম্মদীয় ধৰ্ম্ম য়িহুদী ধৰ্ম্ম হইতে উদ্ভুত, সুতরাং এই উভয় ধৰ্ম্মও সামাজিকতা-প্ৰধান । এই উভয় ধৰ্ম্মের কোনটাই মানুষকে ধৰ্ম্ম-সাধনার্থ জনসমাজ পরিত্যাগ করিতে আদেশ করে না ; বরং ধৰ্ম্মসাধনের পক্ষে সমবিশ্বাসীমণ্ডলীর সাহায্যের প্রয়োজন, এইরূপ নির্দেশ করিয়া থাকে। এই কারণে এতদুভয় ধৰ্ম্মে সামাজিক উপাসনার রীতি প্ৰচলিত দেখা যায় । প্রাচ্য ধৰ্ম্মের ভাব ইহার সম্পূর্ণ বিপরীত। য়িহুদী, খ্ৰীষ্টীয় এবং মুসলমান ধৰ্ম্ম যেমন সামাজিকতা-প্রধান, হিন্দু ও বৌদ্ধধৰ্ম্ম তেমনি ব্যক্তিত্ব-প্রধান। এদেশে “মুক্তিসাধন” এই শব্দ উচ্চারণ করিলেই তাহ মানবাত্মার একার কাৰ্য্য মনে হয় । মানবাত্মাকে এক এক ধৰ্ম্মসাধন করিতে হয় ।