পাতা:ধর্ম্মব্যাখ্যা (প্রথম পর্ব্ব).djvu/১২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১২ ধৰ্ম্মব্যাখ্যা। দ্বিতীয় থাকে;—কাহার কি কাৰ্য্য, কি রূপে কি করিতে হইবে, তাহার শিক্ষা ও জ্ঞান রাজা হইতেই প্রাপ্ত হইয়া থাকে, এবং উহারা যেই যেকোন কাৰ্যা করুক, তৎসমস্ত একমাত্র রাজারই পরিতৃপ্তির নিমিত্ত, উহাদের নিজের জন্য উহার কিছুই না। সেই রূপ জড় শক্তিগুলিও এই দেহের মধ্যে যে কোন কাৰ্য্য নিপণ করে, তাহা ইহাদের নিজের তৃপ্তি সাধনের নিমিত্ত কিছুই নয়, সমস্তই সেই রাজাস্বরূপ চৈতন্য-পুরুষের পরিতৃপ্তির নিমিত্ত। আমাদের বুদ্ধি, মন, ইন্দ্রিয় প্রভৃতি সঞ্চলেই জড়পদার্থ, সুতরাং সকলেই মৃৎপিণ্ডাদির ন্যায় অন্ধ,—প্রকাশশুন্য দ্রব্য। অতএব ইহাদের ক্রিয়া-শক্তি থাকিলেও মৃৎপিণ্ডের হার নিজ নিজের সভার—অস্তিত্বের-প্রকাশও হয় না। অর্থাৎ উহার যে এক একটী বিদ্যমান পদার্থ, তাহাই উহার নিজে নিজে দেখিতে পায় না । সুতরাং অন্য বস্তুর অস্তিত্বও প্রকাশ করিতে পারে না, অগত্য নিয়ম পূৰ্ব্বক কোন ক্রিয়া, করা উহাদের সাধ্যায়ন্ত নয়। কিন্তু তথাপি চৈতন্যের সহিত যোগ থাকাতেই ঐ সকল জড় শক্তি চেতন হয় ; অন্ধকার স্থিত লৌহপিণ্ড যেমন অত্যন্ত উত্তাপের সাহিত সংযুক্ত হইলে, নিজেও প্রকাশিত হয়, এবং নিকটবৰ্ত্তী বস্তুকেও প্রকাশিত করে, তদ্রুপ তোমার বুদ্ধি, মন প্রভূতি জড় পদার্থগুলিও, সেই স্বপ্রকাশ পদার্থের , সহিত সংযুক্ত হইয়া, নিজেও প্রকাশিত হয়, এবং নিকটবৰ্ত্তী-বস্তুকেও একাশিত করে, তাহদের জ্ঞান জন্মায়, এবং ভূমি যে মৃৎপিণ্ডের ন্যায় অন্ধ নও, তাহাও বুঝিতে পার, তোমার অস্তিত্বটি বুঝিতে পার। সুতরাং তোমার ঐ অন্ধজড় শক্তিগুলি বিচারপূর্বক সমস্ত কাৰ্য্য করিতে পারে, এবং চৈতন্য কেবল সাক্ষী-স্বরূপে অবস্থিতি করেন। ইহাই শ্রীতিও বলেন,—“সাক্ষী চেতাঃ কেবলে নিগুৰ্ণশ্চ” “তিনি স্বয়ং কোন কাৰ্য্য করেন না, তিনি সমস্ত ক্রিয়া গুণ শুন্য পদার্থ, তিনি কেবলই চৈতন্য, কেবলই প্রকাশ, তিনি কেবল সাক্ষী-স্বরূপে বিদ্যমান রহিয়াছেন, কিন্তু তাহার । সহিত যোগ থাকাতেই জীবের বুদ্ধি, মন প্রভৃতি জড় পদার্থ গুলি প্রকাশ প্রাপ্ত হয় ” । আরও একটা দৃষ্টাস্তের অনুসরণ করা যাউক, তাহ হইলে, আর একটু বিশদভাবে বিষয়টা বুঝিতে পারিবে। এই পৃথিবী যদি ঘোরতমসাচ্ছন্ন থাকে,