পাতা:ধর্ম্মব্যাখ্যা (প্রথম পর্ব্ব).djvu/১৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২০ –- ক - ধৰ্ম্মব্যাখ্যা । দ্বিতীয় বিষয় বলিলাম, এইরূপ ঔদাসীন্য ধৰ্ম্মেরও ধ্যানাবস্থায়, সহএ সহস্র বার অনুশীলনের দ্বারা দেহ ও আত্মার পার্থক্য এবং পরমাত্মার আকর্তৃত্বাদি অনুভব করিলে, জাগ্ৰং অবস্থায় ও তা হার জাজ্জ্বল্যমান স্মরণ থাকা নিবন্ধন, দেহাভিমান বা বিষয়ানুরাগাদি নীচ বৃত্তি গুলির মনে আসিবার অবকাশই থাকে না। ভ্রাস্তি ও অভ্রাত্তি এক সময়ে হয় না ; রাগ, বৈরাগ্যও এক সময়ে হয় না । কিন্তু ভদ্বারা দৈহিক কাৰ্য্য নিষ্পন্ন হওয়ার কোন বাধা হয় না। কারণ “ সংস্কারলেশতস্তং সিন্ধিঃ" ( সাত্ম্যদর্শন ) । এই বহুমূল্য সূত্রটির তাৎপৰ্য্য বুঝিবার পূৰ্ব্বে আরও একটি বিষয় স্মরণ করিয়া লও। একটি কুকৃ ঘড়ীর ম্পিংএর পূর্ণবেগ থাকিতে, এক একবার পেণ্ডুলমূটা বন্ধ করিলে পরে, আবার কর সংসর্গ মাত্রেই পেণ্ডুলমূট দোলিতে থাকে, এবং পুনৰ্ব্বার ঘড়িটার অন্য সমস্ত যন্ত্রের ও ক্রিয়া হইতে থাকে, ইহা অবশ্যই অবগত আছ। কিম্বা মনে কর, রেলওয়ের গাড়ী শ্রেণী পূর্ণবেগে চলিতেছে, এখন হঠাৎ, ব্রেকৃম্যান ব্রেকৃ কমিয়া এঞ্জিনের গতি স্থগিত করিল, কিন্তু পরে আবার ব্রেক ছাড়িয়া দিলেই হুহু শব্দে গাড়ী সমূহ চলিবে। এই দৃষ্টাত্ত ছটা এইখানে যোজনা করিতে হইবে। আমাদের দেহের অভ্যস্তরের মস্তিষ্ক অবধি বাহিরের চৰ্ম্মাবরণ পর্য্যন্ত যাহা কিছু আছে, তৎসমস্ত যে এক একটি যন্ত্র স্বরূপু, ইহা বারংবার প্রতিপন্ন করা হইয়াছে। এই সমস্ত যন্ত্রগুলিকে আমরা জন্মের সময়েই এরূপ একটি পুর্ণবেগ দিয়া রাখিয়াছি—যদ্বারা জীবন থাকা পৰ্য্যন্তই ঐ যন্ত্রগুলি কাৰ্য্য করিতে পারে। পরে নিরোধশক্তি দ্বারা সেই সমস্তগুলি যন্ত্রের গতিই অবরুদ্ধ করা গেল। অনন্তর আবার যখন ঐ নিরোধের শৈথিল্য হইবে, তখন মনে পূৰ্ব্বকত অধঃস্রোতস্বিনী বৃত্তির সংস্কার গুলির লেশমাত্র পরিস্ফুরিত হইলেই মস্তিষ্ক নৰ্ত্তন করিয়া উঠিবে। শরীরের সমস্ত যন্ত্রই আবার স্বস্ব ক্রিয়ায় প্রবৃত্ত হইবে। কিন্তু এই ক্রিয়ার বেগ পূৰ্ব্বাপেক্ষা কম হইবে, সন্দেহ নাই। এ দিকে ধৰ্ম্মপ্রবৃত্তি গুলিও উদ্দীপ্ত হইয়া, আপন আপন কাৰ্য্যে প্রবৃত্ত হইবে এবং আসক্তি বিহীন হইয়া, সকল প্রকার দৈহিক কাৰ্য্য নিপন্ন হইতে থাকিবে। অথচ ঔদাসীন্যাদি উৰ্দ্ধস্রোতস্বিনী শক্তির প্রভাবে