পাতা:ধর্ম্মব্যাখ্যা (প্রথম পর্ব্ব).djvu/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধৰ্ম্মব্যাখ্যা । > O সময় মতে বিকাশিত হইয়া উঠে। এই প্রকার দর্শন বা স্পর্শনাদি ক্রিয়ার বিলুপ্ত প্রায়-ক্ষীণাবস্থাকে ‘সংস্কার’ * অবস্থা বলে। যেরূপ আমাদের দর্শনাদির জ্ঞান বৃত্তির সংস্কার অবস্থা দেখাইলাম, সেইরূপ আমাদের সকল প্রকার প্রবৃত্তিরই সংস্কার অবস্থা মনে থাকে। কি ধৰ্ম্ম, কি অধৰ্ম্ম সকলেরই সংস্কার অবস্থা আছে। উহার কেহই বিকাশিত হইয়া একেবারে মূলসহ বিনষ্ট হয় না ; মনোমধ্যে সকলেই বিলুপ্তপ্রায় ক্ষীণাবস্থায় থাকে। ইহা কাৰ্য্য দ্বারা সপ্রমাণ হয়। যখন যজ্ঞ দ্বারা, পূজা দ্বারা, তপস্যা দ্বারা, উপঞ্চনা দ্বারা এক একটা কেৰল “অপূৰ্ব্ব’ নামে সদগুণ বা ধৰ্ম্ম আমাদের মনোমধ্যে বিকাশিত হয় ; অথবা যখন আমাদের মনে ধূতি, ক্ষমা, দম, বিবেক, ভক্তি, শ্রদ্ধা, প্রেম ধিরাগ ইত্যাদি ধৰ্ম্ম প্রবৃত্তির বিকাশ হয় ; কিম্বা যখন ক্রোধ, ঈর্ষা, অস্থয়া, হিংসা, কামের তৃষ্ণ ইত্যাদি অধৰ্ম্ম বৃত্তির উদয় হয়, তখন উছারাও পরে পরে উৎপন্ন এক একটা বৃত্তি দ্বারা অভিভূত হইয়া বিলুপ্তপ্রায় ক্ষীণাবস্থায় (সংস্কারাবস্থায় ) মনে থাকে। কিন্তু যখন পুনৰ্ব্বার উপযুক্ত উদ্দীপনার কারণের সহায়তা পায় তখনই ঐ সকল বিলুপ্তপ্রায় প্রবৃত্তি গুলি বায়ু সাহায্যে তৃণাচ্ছন্ন বহ্নির ন্যায় প্রবল বেগে প্রজ্জ্বলিত হইয়া উঠে। ইহার প্রণালী এই ;–মনে করুন, যেন আপনার মনোমধ্যে ক্রোধ প্রবৃত্তি বিজুস্তিত হইয়া স্নায়ু মণ্ডলকে চঞ্চল করিয়া তুলিল। কিন্তু ক্ষণিক পরে যাহার উপর আপনার ক্রোধ, সেই ভৃত্য আসিয় করযোড়ে নতশিরে ভয়ভরে দাড়াইল । তখন অবশ্যই আপনার মনে দয়াবৃত্তির বিকাশ হইবে সন্দেহ নাই। কিন্তু ঠিক একই সময়ে ভিন্ন রকম দুইটা ক্রিয়া মনে হইবে না, সুতরাং তখন অগত্যাই দয়া দ্বারা ক্রোধবৃত্তি সংযত হইয়া বিনষ্ট প্রায় ক্ষীণাবস্থায় আত্মাতেই থাকিল। কিন্তু উহার পুনৰ্ব্বার উদ্দীপনের চেষ্টাও থাকিবে, পরে যখন সময় মতে উপযুক্ত উদ্দীপক কারণ পাইবে, তখন আবার ক্রোধবৃত্তি জাগ্রত হইয়া উঠিবে। জাবার মনে করুন আপনার যেন ভগবানের উপাসন।

  • এই জাতীয় সংস্কারকে বাসনা বলে ।