পাতা:ধর্ম্মব্যাখ্যা (প্রথম পর্ব্ব).djvu/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৪ ' ধৰ্ম্মব্যাখ্যা । করিতে করিতে মনোমধ্যে ভক্তি প্রবৃত্তির বিকাশ হইল, তখন আহলাদের আর সীমা নাই, আনন্দের পার নাই, কিন্তু ঐ সময় যেন আপনার শিশু সন্তান আসিয়া ক্রোড়ে বসিল, তখন অবশ্যই সস্তান স্পর্শের জ্ঞানবৃত্তি আপনার মনে বিকাশিত হইবে, সুতরাং ঐ বৃত্তির উত্তেজনা হইয়া ভক্তিবৃত্তি বিলুপ্তপ্রায় ক্ষীণাবস্থায় মনোমধ্যে থাকিবে । পরে আবার যখন কোন উদ্দীপক কারণের সাহায্য পাইবে, তখন ঐ ভক্তিবৃত্তি পুনঃ পুনঃ উদ্দীপিত হইবে । " অথবা যেন বিবেক ধৰ্ম্মের বিকাশ হইল, তখন আপনি দেখিতে পাইলেন যে, যে মহাশক্তি হইতে অনন্ত কোটি ব্ৰহ্মাও পরিচালিত হইতেছে—সেই মহানের মহান অনন্ত বল হইতেই আপনার এই ক্ষুদ্র শরীর পরিচালিত। এই অনন্ত জগতে এক ব্যতীত কৰ্ত্ত নাই, এক ব্যতীত স্বাধীন নাই, এক ব্যতীত দুইও নাই—আপনি আমি কেহই নাই। এইরূপ ভাবিতে ভাবিতে যেন কোন খান হইতে আর একটা বৃত্তি আসিয়া উপস্থিত। তখন ঐ বৃত্তি দ্বারা বিবেক ধৰ্ম্ম অস্তহিত হইল, বিবেক বৃত্তি বিলুপ্ত প্রায় ক্ষীণাবস্থায় (সংস্কারাবস্থায়) থাকিল। কিন্তু যখন ভবিষ্যতে উদ্দীপক কারণের সাহায্য পাইবে তখনই আবার মনোমধ্যে বিবেক ধৰ্ম্ম বিকাশিত হইবে । সকল প্রকার ধৰ্ম্ম বা অধৰ্ম্মেরই এইরূপ ঘটনা হইয়া থাকে। মনোবৃত্তি—আত্মার বৃত্তিমাত্রেরই ঐ একই রূপ প্রণালী । ইহা দর্শনের স্থিরতর সিদ্ধাস্ত যে, “নাসদুৎপাদোন্‌শ্বঙ্গবৎ” “নাশঃ কারণ লয়ঃ”—“যাহা নাই, তাহা কদাচ উৎপন্ন হইতে পারে না, এবং যাহা অাছে তাহাও একবারে শূন্ধভাবে বিনষ্ট হয় না । সমস্ত-বস্তু, সমস্ত-শক্তি, সমস্ত-ক্রিয়াই এক একটা মূল বস্তু হইতে, এক একটা মূল শক্তি হইতে বিকাশিত হয় মাত্র—তাহাকেই উৎপত্তি বলে। আর নাশের সময়ও কেবল মাত্র স্বাক্ষাবস্থায় বিলীন হয় ” (সাঙ্খ্যদর্শন ) । সুতরাং আমাদের ধৰ্ম্মাধৰ্ম্মও এক একটি মূল ধৰ্ম্ম হইতে বিকাশিত হইয়া আবার শূন্তভাবে বিনষ্ট না হইয়া সুক্ষভাবে (সংস্কারভাবে) অবস্থিতি করে। যদি জায়ার বৃত্তিগুলি সংস্কার রূপে না থাকিত তবে আমার আমিত্বই থাকিত না, মন থাকিত না, অন্তঃকরণ থাকিত না। কারণ, কেবল