পাতা:ধর্ম্মব্যাখ্যা (প্রথম পর্ব্ব).djvu/৩৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૭8૦ ধৰ্ম্মব্যাখ্যা । [পঞ্চম দেহীয়-ভৌতিক পদার্থেরও আছে, তাহাতে সমাধি হইলেই সবিচার সমাধি হইল। সবিতর্ক সমাধিতে অভ্যাস পটুতা হইলে আপনিই সবিচারসমাধিস্ন ভাব উপস্থিত হয়। তীব্র ভর যত্ন সহকারে সবিতর্কের অভ্যাস করিতে করিতে, নিরোধের বল ক্রমেই বৃদ্ধ পাইতে থাকে, এবং সত্ত্বগুণের আধিক্য হইয়। ক্রমেই চিত্তের নিৰ্ম্মলড়াও বাড়ে, সুতরাং ক্রমেই হুক্সস্বাক্ষ তত্ত্বের উপলব্ধির ক্ষমত। জন্মে, অতএব তখন স্থলভূভের স্বাক্ষাবস্থায় অম্লভব হইতে থাকে, আর ভূতের স্বরূপাবস্থাটি মন হইতে অন্তহৃত হইতে হইতে, অবশেষে এককালেই বিলুপ্ত হইয়া যায়, এবং সূক্ষ্মীবস্থারই সম্পূর্ণ রূপে পৱিস্কুৰ্ত্তি হইতে থাকে। তখনই সবিচার সমাধির পুর্ণাবস্থা হইল। এই সময়ে "নিৰ্ব্বত্তিক দেহাত্মজ্ঞান” (৯১ পৃ ১৩ প) বিলুপ্ত প্রায় হয়, স্থলদেহটার উপর যে একটা “ অমিত্ব ” ভাব আছে, তাহ বিনষ্ট প্রায় হয়। এখন মুখ্য কল্পে, ঐ স্ক্ষ-ভৌতিকাবস্থারই উপলব্ধি হয়, এবং পূৰ্ব্ব নিয়মানুসারে তদন্তরালে বুদ্ধি অভিমানাদির ও গৌণ ভাবে অনুভূতি হয়। বলা বাহুলা, যে এই অবস্থায় চৈতন্যেরও একটু আপেক্ষিক অধিক পৰিস্ফুট উপলব্ধি হয়। এই অবস্থায় আস্থার আর এক প্রকার মুক্তি বা বন্ধন বিমোচনের স্বত্রপাত হয়। আমরা যে বাহ বস্তুর উপর মায়া মমতা করিয়া থাকি, তাহা দেহের মায়া মমতার অধীন, আমরা দেখকেই ভালবাসি, তাই বাহবস্তুকেও ভালবাসি, কারণ বাহৰস্তুরদ্বারা দেহের পরিপুষ্টি হইয়াই মানসিক তৃপ্তি লাভ হয়। সুতরাং দেহের মমতাই যে,আমাদের সর্বাপেক্ষায়,অধিক,ইহা আর বিস্তারের প্রয়োজন নাই। অতএব জানা গেল যে দেহের সহিতও আত্মার একটা স্বধৃঢ় হুর্ভেদ্য সম্বন্ধ অপব একটা বন্ধন বিশেষ আছে—যদ্বারা দেহ আর আমি,যেন এক হইয়া আছি। এই বুদ্ধনটিই সচরাচর সমাধি অৰস্থায় অত্যন্ত শ্লথ হইয়া আইসে। এই সময়ে পুৰ্ব্বাপেক্ষায় অধিকতর আনন্দের বিকাশ হয়। বলা বাহুল্য যে, এই যে সকল আনন্দ বা মুখের কথা বলিতেছি ইহা "অলৌকিক মুখ” বা অলৌকিক আনন্দ ; সুতরাং রজঃ আর তম অংশের ক্ষয় হইয়া সত্বশক্তির বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই এই আনন্দের পরিবৃদ্ধি হয়। এই গেল সবিচার সমাধির বিবরণ এখন “গানন্দ সমাধির” কর্থ গুন।