R नवदिशांत्र সোমেন কঁদিতে কঁাদিতে যাহা বলিল, তাহাতে বুঝা গেল, আজ সকালে সে মায়ের সঙ্গে গঙ্গাস্নানে গিয়াছিল। শৈলেশ তাহার গলায় একটা ধাক্কা মারিয়া ঠেলিয়া দিয়া বলিল, যা, সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেল গে যা বলচি । তিনজনে আসিয়া তাহার পড়িবার ঘরে প্রবেশ করিল। ভাইবোন উভয়েরই মুখ অসম্ভব রকমের গম্ভীর-মিনিটখানেক কেহই কোন কথা কহিল না। শৈলেশের লজ্জিত বিরস-মুখে ইহাই প্ৰকাশ পাইল যে, এতটা বাড়াবাড়ি সে স্বপ্নেও ভাবে নাই, কিন্তু বিভা কথা না কহিয়াও যেন সগর্বে বলিতে লাগিল, এ-সব তাহার জানা কথাএইরূপ হইতে বাধ্য। কথা কহিলেন ক্ষেত্ৰমোহন। হঠাৎ তিনি একটুখানি হাসিয়া ফেলিয়া বলিলেন, শৈলেশ, তুমি যে একেবারে চায়ের পেয়ালায় তুফান তুলে ফেললে হে। ছেলেটাকে মারলে কি বলে ? তোমাদের সঙ্গে ত চলা-ফেরা করাই দায় । স্বামীর কথা শুনিয়া বিভা বিস্ময়ে যেন হতবুদ্ধি হইয়া গেল, মুখের দিকে চাহিয়া কহিল, চায়ের পেয়ালায় তুফান কি-রকম ? তুমি কি এটাকে ছেলেখেলা মনে করলে নাকি ? ক্ষেত্ৰমোহন বলিলেন, অন্ততঃ ভয়ানক কিছু একটা যে মনে হচ্ছে না তা অস্বীকার করতে পারিনে । ልዋ তার মানে ? মানে খুব সহজ। আজ নিশ্চয় কি একটা গঙ্গাস্নানের যোগ আছে, সোমেন সঙ্গে গেছে, সঙ্গে সঙ্গে স্নান করেচে। একটা দিন কলের জলে না নেয়ে দৈবাৎ কেউ যদি গঙ্গায় স্নান করেই থাকে ত কি মহাপাপ হতে পারে, আমি ত ভেবে পাইনে । বিভা স্বামীর প্রতি অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হইয়া কহিল, তার পরে ? ক্ষেত্রমোহন জবাব দিলেন, তার পরের ব্যাপারও খুব স্বাভাবিক। ঘাটে কিন্তুর উড়ে-পাণ্ড আছে, হয়ত কেউ দুটো-একটা পয়সার
পাতা:নববিধান - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩০
অবয়ব