পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাগপাশ

জন ভৃত্য আসিয়া বলিল, “মেজবাবুর ঘরে পান চাই।” গৃহিণী বড় বধূকে তাম্বূল আনিতে বলিয়া ভৃত্যকে জিজ্ঞাসা করিলেন,—“কেন, কেহ আসিয়াছে না কি?” ভৃত্য উত্তর করিল, “প্রভাতবাবু আসিয়াছেন।”

 গৃহিণী বড় বধূ বলিলেন, “শোভার আমার অমনই একটি ফুটফুটে বর হয়!” সত্যই প্রভাত অতি সুপুরুষ। বড়বধূ বলিলেন, “মা, প্রভাতের সঙ্গেই কেন ঠাকুরঝির বিবাহ দিন না?”

 কথাটা বড়বধূ যে বিশেষ কিছু ভাবিয়া বলিয়াছিলেন, এমন নহে। তবে অতি ক্ষুদ্র বীজ হইতে যেমন বৃহৎ বনস্পতি উৎপন্ন হয়, তেমনই অনেক সময় অচিন্তিতপূর্ব্ব, হাসিতে হাসিতে বা ক্রীড়াস্থলে কথিত কথা হইতেও সংসারে অতি গুরু ঘটনা ঘটিয়া যায়। কথাটা পূর্ব্বেও যে গৃহিণীর মনে হয় নাই, এমন নহে। কিন্তু তিনি সে কথা প্রকাশ করিতে ভরসা করেন নাই। প্রভাত তাঁহার পুত্ত্রের সতীর্থ; কেবল সেই সূত্রেই তাহার সহিত পরিচয়। তাহার সম্বন্ধে বিশেষ কিছুই জানা নাই। তাহার পিতামাতা কি এ প্রস্তাবে সম্মত হইবেন? অমন ছেলে জামাতা করিতে ইচ্ছা হয়—সত্য; কিন্তু সে যে পল্লীবাসী! ইত্যাদি বিবিধ চিন্তায় তাঁহার মনের ইচ্ছা মুখে প্রকাশিত হয় নাই। নিকটে বিদ্যুৎ পাইলে তড়িৎপ্রবাহ যেমন প্রবল হইয়া উঠে, তেমনই সমর্থন পাইলে ইচ্ছা প্রবলতা লাভ করে। বড় বধূর কথায় আজ,তাহাই

৩৩