পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাগপাশ

হইল; গৃহিণী প্রভাতের সহিত দুহিতার বিবাহের কথাটা ভাল করিয়া ভাবিয়া দেখিলেন,―কর্ত্তাকে বলিলেন। শুনিয়া কর্ত্তা বলিলেন,—“পল্লীগ্রামে মেয়ের বিবাহ দিতে তোমার মত আছে?” গৃহিণী দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করিয়া বলিলেন, “মেয়ের অদৃষ্ট কি আমার হাতধরা? আমি ত পাড়াগাঁয়ের মেয়ে। এখন পরিবার সঙ্গে লওয়া চলিত হইয়াছে। কত লোক যে কত দূর দেশে পরিবার লইয়া যাইতেছে। কলিকাতায় দেখিয়া মেয়ে দিলেই যে কলিকাতায় থাকিবে, এমন কি ধরা আছে?” কর্ত্তা বলিলেন, “তাহা হইলে সব সন্ধান লইয়া কথা পাড়িতে হয়।”

 গৃহে যখন এই কথা প্রকাশ পাইল, তখন দেখা গেল, অনেকেরই আপত্তির প্রধান কারণ, প্রভাতের বাড়ী কলিকাতায় নহে। কিন্তু একটা কায করিতে ইচ্ছা হইলে তাহার স্বপক্ষ যুক্তির অভাব হয় না। যুক্তি বাহির হইতে লাগিল, কলিকাতার বাসন্দা আর কয় জন? কত “বাঙ্গাল” ত কলিকাতাতেই বাস করিতেছে! কাযে যাহারা কলিকাতায় আইসে, তাহারা প্রায় কলিকাতাতেই থাকিয়া যায়। প্রভাত পাঠ শেষ করিয়া কলিকাতায় থাকিলেই সব গোল চুকিয়া যাইবে।

 তখন বিনোদবিহারীর উপর সন্ধান লইবার ভার পড়িল। কলিকাতা প্রভাতচন্দ্রকে তাহার মোহরসে মত্ত করিয়া তুলিয়াছিল। বিনোদবিহারীর কথার উত্তরে সে বলিল, অধ্যয়ন সমাপ্ত করিয়া কলিকাতাতে কর্ম্ম করাই তাহার

৩৪