পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাগপাশ।

অভিপ্রেত। বিনোদবিহারী বলিল, “তুমি অকৃতদার। যদি কলিকাতাতেই থাকিতে হয়, তবে বোধ হয় এখানে বিবাহ করিলে তোমার কায কর্ম্মের সুবিধা হইতে পারে—আরও নানা বিষয়ে সুবিধা হওয়াও অসম্ভব নহে।” প্রভাত সে কথার যাথার্থ্য স্বীকার করিল। বিনোদবিহারী বলিল, “তবে কলিকাতাতেই বিবাহ কর না কেন?” প্রভাত উত্তর করিল, “সে বিষয় স্থির করিবার কর্ত্তা, আমার পিতা ও পিতৃব্য।” বিনোদবিহারী বলিল, “তা’ ত বটেই। আমার ইচ্ছা, তুমি শোভাকে বিবাহ কর। যদি তুমি বল, তোমার বাটীতে প্রস্তাব করিয়া পাঠান যাইতে পারে।”

 এই একান্ত অপ্রত্যাশিত প্রস্তাবে প্রভাতচন্দ্রের শরীরের সমস্ত রক্ত যেন তাহার মস্তকে উঠিল। তাহার মস্তক ঘুরিতে লাগিল। ক্ষণকাল চিন্তা করিয়া প্রভাতচন্দ্র বলিল, “এ কথার উত্তর আমি এখনই দিতে পারিতেছি না। বিবেচনা করিয়া দিব।” বিনোদবিহারী বলিল, “ভাল; পরে বলিও।” প্রভাত বলিল, “আগামী কল্য বলিব।” তাহার পর অন্য কথা পড়িল, কিন্তু প্রভাত বড় অন্যমনস্ক। সে কি ভাবিতেছিল।

 বিনোদবিহারী যখন চলিয়া গেল, তখনও দিবাবসানের বিলম্ব আছে। প্রভাত ভ্রমণার্থ বাহির হইল। কক্ষ হইতে নিষ্ক্রান্ত হইবার সময় সম্মুখে দৃষ্টি পড়িল,— গাড়ীবারান্দার রেলে ঝুঁকিয়া শোভা উদ্যানে জ্যেষ্ঠ ভ্রাতাকে কি বলিতেছে। প্রভাত নয়ন নত করিল; তাহার পর বাহির হইয়া গেল।

৩৫