বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিদ্যার্জ্জনে কঠিন প্ৰয়াস
৫১

গেল—“তোমার এখানে ঠাঁই নাই।” পয়সার অভাবই আমেরিকায় একমাত্র কষ্ট নয়। সাদা চামড়ার অভাবও বড় বিষম পাপ—এই ধারণা সেই রাত্রে আমার প্রথম জন্মিল।

 সারারাত্রি সেই হোটেলের সম্মুখে হাঁটিয়া গা গরম রাখিলাম। গৃহস্বামীর দুর্ব্ব্যবহারে আমি কিছুমাত্র বিচলিত হই নাই। হ্যাম্পটনের স্বপ্নই আমার সমস্ত হৃদয় ভরিয়া রাখিয়াছিল।

 পথের কষ্ট আরও অসংখ্য প্রকার ভুগিয়াছিলাম। খানিকটা পদব্রজে চলিয়া, খানিকটা গাড়ীওয়ালার হাতে পায়ে ধরিয়া বিনা পয়সায় গাড়িতে চড়িয়া, খানিকটা সহযাত্রীদের নিকট পয়সা ভিক্ষা করিয়া, শেষ পর্য্যন্ত ভার্জ্জিনিয়া প্রদেশের একটা সহরে পৌঁছিলাম। তাহার নাম রিচ্‌মণ্ড, এখান হইতে আমার গন্তব্যস্থান আরও ৮২ মাইল।

 রিচ্‌মণ্ডে পৌঁছিতে বেশী রাত্রি হইয়া গিয়াছিল। হাতে পয়সা নাই—তাহার উপর ছেঁড়া ময়লা পোষাক ও কাল রং। ক্ষুধায় পেট জ্বলিতেছে। কত গৃহস্থের বাড়ীতে স্থান পাইবার জন্য ভিক্ষা করিলাম। কেহই একটা ভালকথাও বলিল না। সকলেই পয়সা চায়। পয়সা দিলে তাঁহাদের বাড়ীতে শয়নভোজনের ব্যবস্থা হইতে পারে। শ্বেতাঙ্গ গৃহস্থেরা এইরূপেই অতিথিসৎকার করিয়া থাকেন! আমি নিরুপায় হইয়া রাস্তায় হাঁটিতে লাগিলাম। হাঁটিতে হাঁটিতে রুটি মাংসের দোকানে কত খাদ্যদ্রব্য সাজান রহিয়াছে দেখিতে পাইলাম। তাহা হইতে একটুকু পাইলেই আমি কৃতকৃতার্থ হইতাম। ভাবিতেছিলাম