বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫২
নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর

যদি এক টুকরা মাংসও আজ উহারা আমাকে ধার দেয়, তাহা হইলে ভবিষ্যতে চিরজীবন আমি যাহা কিছু উপার্জ্জন করিব সমস্তই উহাদিগকে মূল্য-স্বরূপ দিব প্রতিজ্ঞা করিতে পারি। কিন্তু আমার প্রতি কাহারও দয়া হইল না। একটা আলু বা এক টুকরা মাংস কেহই আমাকে দিল না। আমি অনাহারে কাটাইলাম।

 রিচ্‌মণ্ডের প্রথম রজনীতে আমার এই অভিজ্ঞতা। আমি ক্ষুধার্ত্ত, দুর্ব্বল ও অবসন্ন ভাবে রাস্তায় ঘুরিতে ফিরিতে থাকিলাম। কিন্তু তথাপি হতাশ হই নাই—জীবনের ধ্রুব-তারাকে ভুলি নাই—হ্যাম্পটনে বিদ্যার্জ্জনের সঙ্কল্প ত্যাগ করি নাই। তার পর যখন আর পায়ে হাঁটা অসম্ভব বোধ হইল, তখন রাস্তার পার্শ্বে একটা কাঠের বড় তক্‌তার নীচে শুইয়া পড়িলাম। কোন লোক দেখিতে পাইল না। সেই রাত্রিতে কত লোক তক্তার উপর দিয়া চলাফেরা করিল। আমি মাটিতে শরীর রাখিয়া থলেটাকে বালিশ করিয়া হ্যাম্পটনের নাম জপিলাম। সকালে উঠিয়া দেখি, আমি একটা জাহাজের নিকটে রহিয়াছি। অসহ্য ক্ষুধার জ্বালা। জাহাজের কাপ্তেনের নিকট কিছু প্রার্থনা করিলাম। তাঁহার অনুমতিক্রমে জাহাজ হইতে মাল নামাইতে লাগিলাম। তারপর যথাসময়ে মজুরির মূল্য পাইয়া খাবার খাইতে বসিলাম। ওরূপ সুখের খাওয়া বোধ হয় আর কখনও আমি খাই নাই।

 কাপ্তেন সাহেব আমার প্রথম কাজেই প্রীত হইয়াছিলেন। তিনি আমাকে আরও কাজ দিতে চাহিলেন। আমি রাজী