বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিদ্যার্জ্জনে কঠিন প্ৰয়াস
৫৩

হইলাম। যে মূল্য পাইতাম তাহা দিয়া দৈনিক আহারের খরচ চলিত—কিন্তু ঘরভাড়া কুলাইত না। কাজেই অল্প খাইয়া থাকিতাম—এবং রাত্রে আসিয়া সেই কাঠের তলায় মাটির উপরে শুইয়া থাকিতাম। এই উপায়ে কিছু পয়সা বাঁচিল। তাহার দ্বারা রিচ্‌মণ্ড হইতে হ্যাম্পটনে যাইবার খরচ সংগ্রহ করিলাম।

 এই ঘটনার বহুকাল পরে রিচ্‌মণ্ডের নিগ্রো-অধিবাসিগণ আমাকে নিমন্ত্রণ করিয়া সম্বর্দ্ধনা করিয়াছে। সম্বর্দ্ধনা-উৎসবে অন্ততঃ দুই হাজার কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষ ও রমণী যোগদান করিয়াছিল। ঘটনাচক্রে সেই কাঠের তক্তার সমীপবর্ত্তী এক গৃহে এই অভ্যর্থনা ও সাদরসম্ভাষণাদি নিষ্পন্ন হয়। সকলে অতি আন্তরিকতার সহিতই আমাকে অভিবাদন করিলেন। কিন্তু এই আনন্দের দিনে আমি সম্বর্দ্ধনা অভিবাদন প্রভৃতিতে একেবারেই যোগ দিতে পারি নাই। আমি আমার রিচমণ্ডে প্রথম পদার্পণের কথাই মনে করিতেছিলাম। সেই রজনীর অভিজ্ঞতাই আমার চিত্তে অন্যান্য সকল চিন্তার স্থান অধিকার করিয়া বসিয়াছিল। আমি সেই রাস্তার পার্শ্বের কাঠের তক্তা এক মুহূর্ত্তের জন্যও ভুলিয়া থাকিতে পারিলাম না।

 কাপ্তেন মহাশয়কে যথেষ্ট ধন্যবাদ দিয়া আমি আমার তীর্থযাত্রায় আবার বাহির হইলাম। হ্যাম্পটনে পৌঁছিবার পথে এবার কোন উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে নাই, পৌঁছিবার সময় হাতে ১॥৴০ পুঁজি থাকিল।

 বিদ্যামন্দিরের বহির্ভাগ দেখিয়াই আমি রোমাঞ্চিত হইলাম।