বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হ্যাম্পটনে জীবন গঠন
৭৩

 দ্বিতীয় বৎসরের গ্রীষ্মাবকাশ আসিল। এবার আমার আর্থিক অবস্থা মন্দ ছিল না। আমার মাতা ও দাদা কিছু টাকা পাঠাইয়াছিলেন, একজন শিক্ষকও কিছু দান করিয়াছিলেন। আমি ‘স্বদেশে’ চলিলাম। ওয়েষ্ট ভার্জ্জিনিয়ার ম্যাল্‌ডেনে এবার ছুটি কাটিল

 বাড়ীতে আসিয়াই দেখি, নুনের কল বন্ধ, কয়লার খাদে কাজ চলিতেছে না, কুলীরা সব ‘ধর্ম্মঘট’ করিয়াছে। এই ধর্ম্মঘটের একটা রহস্য বলিতেছি। প্রায়ই দেখিতাম, যখন কুলী মহলের পরিবারে দুই তিন মাসের উপযুক্ত খরচের টাকা জমা হইয়া গিয়াছে তখনই তাহারা কাজ কর্ম্ম ছাড়িয়া মহাজনগণকে বিব্রত করিত। যখনই বসিয়া খাইতে খাইতে টাকা ফুরাইয়া আসিত তখনই আবার তাহারা দলে দলে কাজে ঢুকিত। এইরূপে অনেকে যথেষ্ট দেনাও করিয়া ফেলিত। তখন আর তাহারা তাহাদের পুরাতন অভাব অভিযোগ ইত্যাদির কথা তুলিতই না—কোন উপায়ে একটা কাজ পাইলেই খুসী থাকিত। মোটের উপরে দেখিতাম, যে ধর্ম্মঘটের ফলে কুলীদের সর্ব্বাংশেই ক্ষতি হইত। অনেক সময়ে কল ও খাদের কর্ত্তা তাহাদিগকে পুনরায় কাজ দিতে অস্বীকার করিতেন। তখন তাহারা যথেষ্ট ব্যয় ও কষ্ট স্বীকার করিয়া অন্যত্র চলিয়া যাইতে বাধ্য হইত। আমার যতদূর বিশ্বাস, কতকগুলি হুজুগপ্রিয় পাণ্ডাদিগের পাল্লায় পড়িয়া কুলীরা নিজের সর্ব্বনাশ নিজে ডাকিয়া আনিত। ধর্ম্মঘটের আমি আর কোন ব্যাখ্যা ত পাই না।