বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৪
নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর

 আমাকে দেখিয়া আমার পরিবারের সকলেই অবশ্য মহা খুসী। তাহার পর আমার নিমন্ত্রণের পালা পড়িল। পাড়ার প্রত্যেকেই আমাকে তাহাদের বাড়ীতে এক এক দিন খাইতে বলিত। আমি তাহাদিগকে হ্যাম্পটনের গল্প করিতাম। তাহা ছাড়া আমাকে ধর্ম্মমন্দিরে রবিবারের বিদ্যালয়ে এবং আরও কয়েক স্থানে বক্তৃতা করিতেও হইয়াছিল। দিন মন্দ কাটিতেছিল না—কিন্তু ধর্ম্মঘটের ফলে আমার স্বগ্রামে কাজ জুটিল না। তাহা হইলে পুনরায় হ্যাম্পটনে যাইব কি করিয়া? একদিন অনেক দূর পর্য্যন্ত চলিয়া গেলাম তথাপি কাজ পাইলাম না। ফিরিতে বেশী রাত্রি হইয়া পড়ে—রাস্তায় একটা ভাঙ্গা বাড়ীতে শুইয়া থাকিলাম। শেষে দেখি ভোর রাত্রি তিনটার সময় আমার দাদা আমাকে খুঁজিতে খুঁজিতে ঐ ‘পোড়ো’ বাড়ীতে আসিয়া উপস্থিত। আমাকে খবর দিলেন যে, রাত্রে মাতার মৃত্যু হইয়াছে।

 মাতার মৃত্যুতে আমি যার পর নাই দুঃখিত হইলাম। তিনি বহু কাল হইতেই ভুগিতেছিলেন জানিতাম—কিন্তু হঠাৎ তাঁহার মৃত্যু হইবে ভাবিতে পারি নাই। আমার সাধ ছিল—অন্তিমকালে আমি তাঁহার সেবা করিব। কিন্তু সে সৌভাগ্যে আমি বঞ্চিত হইলাম। তাঁহার উৎসাহে ও সাহসেই আমি লেখাপড়া শিখিতে পারিয়াছি। তাঁহার অভাব আমার জীবনে একমাত্র দুঃখের কারণ হইল। ইহার পূর্ব্বে আমি কখনও যথার্থ দুঃখ অনুভব করি নাই। তাহার পরেও আমি কখন অন্যান্য দুঃখকে দুঃখ জ্ঞান করি নাই।