পাতা:নির্জ্জন গৃহকোণে.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিজ ন গৃহ কোণে শৈলপতির সেদিন শহরে যাবার কথা, ঘুম ভেঙে মলিনা কিন্তু পাশের ঘরে টুকরো টুকরো কথা শুনতে পেলে, কলহাস্তের উচ্ছাসে কথা মাঝে মাঝে চাপা পড়ে যাচ্ছে । তখনও ঘুমের ঘোর ভাল করে কাটেনি, তবুও ঘুম ছাড়িয়ে কথা কানে ছড়িয়ে পড়ছে । মলিনার দক্ষিণের জানলা দিয়ে নদী দেখতে পাওয়া যায়, নিস্তরঙ্গ শাস্ত নদীর দিকে চেয়ে নিম্পন্দ মলিনা ক্ষণকাল চুপ করে পড়ে রইল, কান রইলো পাশের ঘরের নরনারীর গুঞ্জনে । কোনো কথাই স্পষ্ট বোঝা যায়না, তবু পুরুষের কণ্ঠ পরিচিত, শৈলপতির চিরপরিচিত হাসি মলিনার ভোলবার কথা নয়। হাস্যরত শৈলপতির মুখপানি মলিনার স্পষ্ট মনে পড়লো । প্রকম্পিত হ’ল পৃথিবী, এক মুহূৰ্ত্তে সব শেষ হ’ল, মূৰ্ত্তি গেল ভেঙে, মুর হ’ল মান। যে দুজনকে ও বিশ্বাস করে, যাদের ওপর একান্ত অসহায়ের মতে নির্ভর করে আছে মলিন, তারাই ওকে চূর্ণ বিচূর্ণ করল্। ভাত, চকিত মলিন উত্তেজনায় উঠে বসলো। রুগ্নকণ্ঠে আৰ্ত্তনাদ করে উঠলে, - জয়ন্তী, জয়ন্তী, নাস । রাজ্যহারা অনাথার আকুল অান্তনাদ । ছুটে এলো জয়ন্তী, একি আপনি উঠেছেন কেন দিদি ? সে কথার উত্তর না দিয়ে যেন বিকারের ঘোরে মলিনা চাংকার করে জিজ্ঞাস । করলে, কে কথা কইছে, ওঘরে ওরা কারা ? —ও, ওঘরে, ইলেকটিকের মিটার দেখতে এসেছিল, চলে গেছে, এই বলে জয়ন্তী দরজাট আস্তে আস্তে ভেজিয়ে দিলে । এই দরজার দামনে দিয়েই বাইরে যাবার রাস্তা । মলিন তীক্ষকণ্ঠে বল্লে—খুলে দাও শীগগির, খুলে দাও দরজা । > X