পাতা:নীতি-সন্দর্ভ.djvu/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Woy নীতি-সন্দর্ভ ! জীবনধারণের একমাত্র সম্বল। একদা প্রতাপ সেই গিরিপ্রদেশে তৃণশয্যায় শায়িত আছেন, এমনসময় স্নেহময়ী দুহিতার ক্ৰন্দনধ্বনি তাহার শ্রুতিগোচর হইল। তিনি কস্তাটির দিকে নয়ন ফিরাইয়া দেখিলেন, একটা বন্য বিড়াল শিশুর হস্তস্থিত তৃণবীজনিৰ্ম্মিত পিষ্টকখণ্ড লইয়া পলায়ন করিতেছে। প্রতাপের হৃদয় মথিত হইয়া গেল ; আর স্থির থাকিতে পারিলেন না ; চক্ষুর জলে তাহার বক্ষদেশ ভাসিয়া গেল। দুই দিবস পূর্বে যাহার মস্তকোপরি রাজছত্র বিদ্যমান ছিল, র্যাহার স্নেহাধার পুত্রকন্যাগণ নানাবিধ চৰ্ব্বা, চুন্য, লেহ ও পেয় দ্বারা রসনার পরিতৃপ্তি সাধন করিত, তাহারই প্রাণাধিক তনয় একখণ্ড সামানাপিষ্টকের জন্য রোদন করিতেছে, ইহা কি মানুষের সহ্য হয় ? তিনি মনের আবেগে আকবরের বশ্যতা স্বীকার করিয়া তৎসকাশে একখানি পত্র প্রেরণ করিলেন–কিন্তু পরক্ষণেই যখন বিবেক তাহাকে চুপি চুপি বলিয়া দিল যে, তিনি তাহার কর্তৃবা ভুলিয়াছেন, তখনই পূর্বপ্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করিয়া আবার অসিহস্তে দণ্ডায়মান হইতে কৃতসঙ্কল্প হইলেন । বিবেকের দংশনে তাহার জ্ঞানচক্ষু উল্মীলিত হইল । স্বদেশের প্রতি প্রতাপসিংহের যে কৰ্তব্য ছিল সেই কর্তব্য-দায় হইতে মুক্তি লাভ করিবার জন্য প্রতাপ প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী “দিল্লীশ্বরে বা, জগদীশ্বরে বা" তাকবরের বিরুদ্ধে অসিধারণ কবেন এবং ক্রমাগত পঞ্চবিংশতিবৎসর কঠোর বনবাসত্রত অবলম্বন করিয়া স্বদেশপ্রেমের জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত আমাদের সম্মুখে রাখিয়া গিয়াছেন।