বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পক্ককেশ গণেশদাদাকে পাঁচন হাতে তালপাতার ছাতি মাথায় গরু চরাতে দেখে।

 গণেশদাদা বললে—বোসো, বোসো দাদাঠাকুর। তামুক খাবা?

 —ও শিখিনি।

 —এতটুকু দেখিচি তোমারে। কত বড়্ডা হয়ে গিয়েছ। হ্যাদে, দিজ্ঞ্যেস করো দিনি সেই ইন্‌জিরি? মনে আছে কিনা দেখি।

 ওঃ, অনেক দিনের কথা—উচ্চ প্রাইমারি পাঠশালার সেই দিনগুলি কতকাল আগে অতীতে মিলিয়ে গিয়েছে। আজ পনেরো বছর আগের ব্যাপার সেই গণেশদাদাকে ইংরিজি শেখানো। কি কি শিখিয়েছিলাম তাই কি ছাই আমার মনে আছে?

 গণেশদাদা কিন্তু হাসি-হাসি মুখে জিজ্ঞাসুনেত্রে চেয়ে আছে আমার দিকে। বললাম—তুমি বলতে আরম্ভ করো?

 —ওভার মানে ওপর—

 —বেশ, বেশ—তারপর!

 —তুমি জিগোও দাদা,—আমি বলি—

 —জল?

 —ওয়াটার।

 —আকাশ?

 —স্কাই।

 —দুধ?

 —মিল্ক।

 গণেশদাদার মুখে বিজয়ীর গর্বিত হাসি। তুমি তো ঠকাতে পারলে না দাদাঠাকুর এতদিন পরেও, ভাবটা এই রকম। আমি ভাবচি, এ-ইংরিজি শিখে তালপাতার ছাতি মাথায় গোচারণরত গণেশদাদার কি উপকার হবে?

 গণেশদাদা বললে—বলো বলো—

 —পিঁপড়ে?

১১৩