কড়ি নিয়ে সে তো আর চলে যায়নি। আমি কি করবো বলুন কাকা। আমার দ্বারা কিছু হবে না।
—তা হবে কেন? তা কি আর হবে? ছাই ভস্মো কি সব মাথামুণ্ডু লিখতেই শিখেচো। গাঁয়ের কোন উপ্গার কি তোমায় দিয়ে হবে বাবা—তা হবে না। সে বুঝতে পেরেচি অনেকদিন—
মুখুয্যে কাকা অপ্রসন্ন মুখে চলে গেলেন। কি করবো—আমি নাচার। পল্লীমঙ্গল সমিতির সেক্রেটারী তো আর নবাব নাজিম খান্জাখাঁ নয় যে, যাকে তাকে ধরে নিয়ে এসে যে কোনো অপরাধে গর্দান নেবো। আমি কি করতে পারি বরো বাগদিনীর?
হঠাৎ বরোর সঙ্গে একদিন গোপাল নগরের পথে দেখা।
একটা ভাঙ্গা চুপড়ি কাঁখে সে বাজারে যাচ্চে, পরনে শতছিন্ন মলিন বস্ত্র।
বললাম—কি বরো? ভাল আছ?
বরো থমকে রাস্তার এক পাশে সরে গিয়ে দাঁড়াল জড়সড় হ’য়ে, আমার পথ দেবার জন্য, যদিও তার কোনো প্রয়োজন ছিল না, পথ দু’জনের পক্ষে যথেষ্ট চওড়া। বললে—বাবু, আমাকে কাঠ দেবেন একখানা!?
—কাঠ? কি কাঠ
—বাবু, সেই রেশম কাঠ।
—বুঝলাম, তোমার নেই?
—না বাবু, কে এনে দেবে, মোদের কথা কি কেউ শোনে? কাপড় নেই। এই দেখুন এই কাপড়খানা—
বরো আঁচলের অংশটুকু আমার সামনে মেলে ধরলে। বললাম—থাক্ থাক্ ও দেখাতে হবে না, দেখেই বুঝতে পাচ্চি।
কথাটা তখনি মনে পড়ে গেল।
বললাম—আচ্ছা, মুখুয্যেবাড়ির কাজটা ছেড়ে দিলে কেন হঠাৎ? মুখুয্যে কাকা সেদিন বলছিলেন—
২৫