বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

করেচে! এত কথা আমি কি করেই বা জানবো। না জানি ভালো করে ওর পূর্ব ইতিহাস, না জানি ওর বর্তমান জীবনের কোনো খবর।

 কথাবার্তা চালু রাখবার জন্যে বললাম—বটে! বেশ, বেশ। একদিন তোমার আশ্রমে যাবো।

 গিরিবালা হাতজোড় করে বললে—সে সৌভাগ্যি কি আমার হবে বাবা!

 —না না, সে কি কথা। কতদিন আশ্রম করেচ?

 —তা বাবা বৃন্দাবন থেকে যে বছর ফিরলাম, সে বছরই। শ্রাবণ মাসে বৃন্দাবন থেকে ফিরলাম, কার্তিক মাসে আশ্রম পিতিষ্ঠা করলাম।

 তাহোলে বৃন্দাবনেও গিয়েচে গিরিবালা। না, আগে যা ভেবেছিলাম তা নয়। ব্যাপার জটিল হয়ে উঠেছে। বললাম—বৃন্দাবনেও গিয়েছিলে?

 —পাপমুখে আর কি করে বলি?

 —আর কোথায় গিয়েচ?

 —কোথাও আর যাওয়ার দরকার হয়নি। এখানেই তিনি আমায় কৃপা করেচেন। আর অনর্থক তীর্থে তীর্থে বেড়িয়ে কি করবো? যা কাজ তা হয়ে গেল। তিনি আমায় দয়া করে সব দিয়েচেন।

 তিনি মানে ভগবান? না, এ দেখচি খুবই জটিল ব্যাপার। থৈ পাওয়া যাচ্চে না। গিরিবালা প্রবর্তকের থাকেও নেই, একেবারে কৃপাসিদ্ধ। এর সঙ্গে কথা বলতে সাহস হয় কই!

 বললাম—ও।

 —আমায় তিনি বললেন, আমাকে তোর পূজা করতে হবে না। তুই যে আমার মা। আমি তোর ছেলে।

 —বটে!

 আমার চোখ কপালে ওঠবার উপক্রম হয়েছে। আর না, একে এবার তাড়াতে হবে। আর কোনো কথা চলবে না।

৪৫